ডা. রবির মানবিক মুখ: বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি নিয়ে আসা এক টিভি চরিত্র।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রচারিত একটি টেলিভিশন ধারাবাহিক, ‘দ্য পিট’ (The Pitt)। এটির একটি চরিত্র, ডা. মাইকেল রবিন্যাভিচ, ওরফে ডা. রবি, বর্তমানে দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেছেন।
একজন ইমার্জেন্সি রুমের ডাক্তারের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি আলোচনায় এসেছেন, বিশেষ করে কোভিড পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিক অবস্থা এবং রোগীদের প্রতি তাদের মানবিক দিকটি ফুটিয়ে তোলায়।
ডা. রবির চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা নোয়া ওয়াইল। চরিত্রটি এতটাই বাস্তবসম্মত যে, এটি দর্শকদের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের চিলড্রেনস হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জ্যানেট সেম্পল-হেস-এর মতে, ডা. রবি চরিত্রে নোয়া ওয়াইলের শান্ত, আত্মবিশ্বাসী এবং সহানুভূতিশীল রূপটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, “ডা. রবির চরিত্রে অভিনয় করা ব্যক্তি শুধু জ্ঞানীই নন, রোগীদের প্রতি তার গভীর যত্ন ও মনোযোগ দৃশ্যমান।”
ডা. সেম্পল-হেস, যিনি ৩৩ বছর ধরে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, সম্প্রতি অবসর গ্রহণ করেছেন।
‘দ্য পিট’-এর অভিনেতা ও কলাকুশলীরা যখন হাসপাতালের ‘মেক মার্চ ম্যাটার’ প্রচারের জন্য এসেছিলেন, তখন তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাটা যেন তার কর্মজীবনের একটি সুন্দর সমাপ্তি ছিল।
ডা. সেম্পল-হেসের মতে, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এবং নার্সদের কাজ কতটা কঠিন, তা এই ধারাবাহিকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
‘দ্য পিট’-এর নির্মাতারা হাসপাতালের ভেতরের কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছেন, যা দর্শকদের কাছে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
ডা. রবির চরিত্রটি রোগীদের উদ্বেগ, ভয় এবং উদ্বেগকে গুরুত্ব দেয়।
এমনকি কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি রোগীদের প্রতি সহানুভূতি দেখান।
একটি দৃশ্যে দেখা যায়, একটি গণ দুর্ঘটনার পর ডা. রবি মানসিক চাপে ভেঙে পড়েন এবং ইহুদিদের প্রার্থনাসূত্র ‘শেমা’ পাঠ করেন, যা গভীর রাতেও মানসিক শান্তির জন্য পাঠ করা হয়।
ধারাবাহিকটিতে হাসপাতালের কর্মী সংকট, ভ্যাকসিনের বিরোধিতা এবং প্রতিদিনের বিপদগুলোও তুলে ধরা হয়েছে।
ডা. ব্র্যাডলি গোল্ডবার্গ, যিনিও একজন ইমার্জেন্সি রুমের চিকিৎসক, ‘দ্য পিট’-এর বাস্তবতাকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করেন।
তিনি বলেন, “এখানে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ—শিশু, বয়স্ক, আশ্রয়হীন থেকে শুরু করে ধনী—সবার প্রতিচ্ছবি দেখা যায়।
এটি কোনো ঝলমলে হাসপাতালের চিত্র নয়, বরং বাস্তব জীবনের কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে।”
বাস্তবতার এই চিত্র দর্শকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এটি শুধু একটি বিনোদনমূলক ধারাবাহিক নয়, বরং চিকিৎসা পেশা এবং স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন