কঙ্গোর কারাগারে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ৩ মার্কিনির ভাগ্যে কী ঘটল?

গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (DRC) একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া তিন মার্কিন নাগরিককে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহে কঙ্গোর কর্তৃপক্ষ তাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

কঙ্গো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার ফলস্বরূপ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, এই তিন মার্কিন নাগরিক হলেন মার্সেল মালঙ্গা, টাইলার থম্পসন জুনিয়র এবং বেঞ্জামিন রিউবেন জালমান-পোলুন। গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি সামরিক আদালত এই ৩৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে, যাদের মধ্যে এই তিনজনও ছিলেন।

মার্সেল মালঙ্গার বাবা ক্রিশ্চিয়ান মালঙ্গার নেতৃত্বে হওয়া ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের এই সাজা দেওয়া হয়।

গত মে মাসে কঙ্গোর রাষ্ট্রপতি ভবনের গার্ডদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ক্রিশ্চিয়ান মালঙ্গাসহ অন্তত ছয় জন নিহত হন। অভ্যুত্থানকারীরা সরকার উৎখাত করতে চেয়েছিল।

কঙ্গোর রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র টিনা সালামা জানান, “এই তিন মার্কিন নাগরিক এখন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করবে।” তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার তাদের আমেরিকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই সাজা মওকুফের আবেদনটি পাবলিক প্রসিকিউটর করেছিলেন এবং কঙ্গোর বিচারমন্ত্রী তা সমর্থন করেন।

কঙ্গোর প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিচার বিভাগীয় সম্পর্ক এবং মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই তিন মার্কিন নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্র ও কঙ্গোর মধ্যে একটি সম্ভাব্য ‘খনিজ সম্পদ-বিনিময়ে নিরাপত্তা’ চুক্তির পথ সুগম করতে পারে।

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে এমন চুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

গত সপ্তাহে কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা বিষয়ক উপদেষ্টা মাসাদ বোলস এবং আফ্রিকার বিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোরিণা স্যান্ডার্সের সঙ্গে রাজধানী কিনশাসায় বৈঠক করেন।

বৈঠকের বিষয়ে টিনা সালামা তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লেখেন, “আলোচনায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে: কঙ্গোর আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিশ্চিত করে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং খনিজ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগসহ অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা।”

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *