ব্রিটিশ ডিউকের ছেলের সম্পত্তি: প্রকৃতির জন্য ৪০ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব!

ব্রিটিশ ডিউকের পুত্রের বিশাল সম্পত্তি: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এগিয়ে আসছে একটি সংস্থা

উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের একটি ঐতিহাসিক অঞ্চলে অবস্থিত বিশাল রথবেরি এস্টেট-এর মালিকানা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ডিউক অফ নর্দাম্বারল্যান্ডের কনিষ্ঠ পুত্র লর্ড ম্যাক্স পার্সি এই বিশাল সম্পত্তির বিক্রির ঘোষণা করেছেন, যা প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রায় ৯,৪8৬ একর জমির উপর বিস্তৃত এই এস্টেটটি কেনার জন্য এগিয়ে এসেছে নর্দাম্বারল্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

শত শত বছর ধরে পার্সি পরিবারের, অর্থাৎ নর্দাম্বারল্যান্ডের ডিউকদের মালিকানাধীন ছিল এই জমি। এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার উদ্দেশ্যে, এবার এটিকে একটি বিশেষ প্রকল্পের অধীনে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিখ্যাত প্রকৃতিবিদ স্যার ডেভিড অ্যাটেনবারো।

সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জ

নর্দাম্বারল্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট এই বিশাল সম্পত্তি কেনার জন্য প্রায় ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় একটি বিশাল অঙ্ক) সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য হলো, উত্তর-পূর্ব উপকূল থেকে স্কটিশ সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৪০ মাইল দীর্ঘ একটি ‘প্রাকৃতিক করিডোর’ তৈরি করা, যা বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করবে।

বর্তমানে, এই অঞ্চলে মেরলিন (ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ছোট বাজপাখি), গ্রীষ্মকালীন পরিযায়ী পাখি এবং বিপন্নপ্রায় লাল কাঠবিড়ালীসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী বসবাস করে। ট্রাস্টের পরিকল্পনা হলো, এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য আরও বৃদ্ধি করা।

স্থানীয়দের সঙ্গে সহযোগিতা

এই প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে সহযোগিতা করা। ট্রাস্ট চাইছে, কৃষকদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে, যাতে তারা পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে।

এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের দিকেও তারা নজর রাখছেন।

অর্থ সংগ্রহের প্রচেষ্টা

নর্দাম্বারল্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট এরই মধ্যে এই এস্টেটের পশ্চিমাংশ কিনে নিয়েছে। তবে পুরো সম্পত্তিটি অধিগ্রহণ করতে তাদের আরও অর্থের প্রয়োজন।

তাই তারা জনসাধারণের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহের চেষ্টা করছে। ২০২৩ সালের মধ্যে যদি তারা প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়, তবে এই জমি বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে, যা প্রকৃতি এবং পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে।

একটি বিশেষ সুযোগ

এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অমূল্য। এখানে মানুষের জীবন ও প্রকৃতির সহাবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব।

স্যার ডেভিড অ্যাটেনবারো

তাঁর মতে, এই প্রকল্পটি প্রকৃতি রক্ষার এক বিরল সুযোগ।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

নর্দাম্বারল্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট চাইছে, এই অঞ্চলে আদি প্রজাতির ঘোড়া, গবাদি পশু এবং ভবিষ্যতে ইউরোপীয় বাইসন-এর মতো প্রাণী ফিরিয়ে আনতে।

তাদের এই উদ্যোগ সফল হলে, এটি কেবল নর্দাম্বারল্যান্ডের জন্যই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে প্রকৃতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *