১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকটক ব্যবহারে ডাচ সরকারের নিষেধাজ্ঞা!

নেদারল্যান্ডসের সরকার ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকটক (TikTok) এবং ইনস্টাগ্রামের (Instagram) মতো সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর সামাজিক মাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাবগুলো বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের প্রতি শিশুদের ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহারের সময় সীমিত করা, শোবার ঘরে ফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহারের সুযোগ না দেওয়া এবং খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত সময় বের করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে আসক্তি বাড়ানোর মতো উপাদান (additive design features) বেশি থাকে, যা শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে শিশুদের মধ্যে প্যানিক অ্যাটাক, বিষণ্ণতা এবং ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বর্তমানে, টিকটক ও ইনস্টাগ্রাম উভয় প্ল্যাটফর্মেই ব্যবহারকারীর বয়স কমপক্ষে ১৩ বছর হতে হয়। তবে, ডাচ সরকার মনে করে, শিশুদের জন্য এই বয়স যথেষ্ট নয়।

নেদারল্যান্ডসের এই পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অন্যান্য দেশও শিশুদের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

ডেনমার্ক এবং ফ্রান্সও একই ধরনের পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছে। এছাড়া, সুইডেন শিশুদের স্ক্রিন টাইম সীমিত করার জন্য সুপারিশ করেছে।

বিশেষজ্ঞদের একটি দল, যারা ডাচ পার্লামেন্টের অনুরোধে এই বিষয়ে গবেষণা করেছেন, তাঁরা দেখেছেন যে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম এবং সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের কারণে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

শিশুদের স্বাস্থ্য বিষয়ক উদ্বেগের কারণে, ডাচ স্কুলগুলোতেও ট্যাবলেট, মোবাইল ফোন এবং স্মার্টওয়াচ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া।

গত মে মাসে, নেদারল্যান্ডসের প্রায় ১,৪০০ জন চিকিৎসক এবং শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।

নেদারল্যান্ডসের কুইন ম্যাক্সিমা (Queen Máxima) তাঁর কনিষ্ঠ কন্যা প্রিন্সেস আরিয়ানের (Princess Ariane) মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারের কারণে চোখের সমস্যা হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।

যদিও এই পদক্ষেপ নেদারল্যান্ডসের জন্য নেওয়া হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে শিশুদের আসক্তি এবং এর সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *