চীনের বিরুদ্ধে ডাচ সরকারের বড় পদক্ষেপ! নেক্সপেরিয়ার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ

নেদারল্যান্ডস সরকার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে চীনা মালিকানাধীন চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানি নেক্সপেরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রযুক্তি চীনের হাতে চলে যাওয়া এবং ইউরোপ ও ডাচ অর্থনীতির সুরক্ষার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নেক্সপেরিয়া মূলত গাড়ি ও ভোক্তা ইলেকট্রনিক্সের জন্য চিপ তৈরি করে থাকে।

সরকারের এই পদক্ষেপে সাংহাইয়ে উইংটেকের শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ কমে গেছে।

উইংটেক হলো নেক্সপেরিয়ার মূল কোম্পানি।

তারা দ্রুত তাদের আইনি পরামর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য সরকারের সমর্থন চাইছে।

ডাচ অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে কারণ কোম্পানির মধ্যে কিছু “গুরুতর প্রশাসনিক দুর্বলতা” দেখা দিয়েছে।

সরকারের এই হস্তক্ষেপে নেক্সপেরিয়ার ব্যবস্থাপনার কিছু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন বা বাতিল করার ক্ষমতা আসবে, তবে কোম্পানির স্বাভাবিক উৎপাদন প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, নেক্সপেরিয়ার প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও সক্ষমতা রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল।

এই ধরনের সক্ষমতা হারালে ডাচ ও ইউরোপীয় অর্থনীতির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।

উইংটেক এক বিবৃতিতে বলেছে, ডাচ আদালতের আদেশের কারণে নেক্সপেরিয়ার উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ সাময়িকভাবে সীমিত করা হয়েছে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কর্মপরিচালনার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে।

এর আগে, গত ৬ অক্টোবর আমস্টারডাম আদালতের নির্দেশে নেক্সপেরিয়ার পরিচালনা পর্ষদ থেকে চেয়ারম্যান ঝাং জুয়েঝেংকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

তার স্থলাভিষিক্ত হবেন একজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি, যিনি কোনো চীনা নাগরিক নন এবং তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে।

নেক্সপেরিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা “বিদ্যমান সকল আইন ও বিধি, রফতানি নিয়ন্ত্রণ এবং নিষেধাজ্ঞার” প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

নেক্সপেরিয়া বিশ্বে ডায়োড ও ট্রানজিস্টরের মতো সাধারণ কম্পিউটার চিপের অন্যতম বৃহৎ নির্মাতা।

এছাড়াও, তারা ব্যাটারির কার্যকারিতা বাড়াতে চিপ ব্যবহারের উন্নত প্রযুক্তিও তৈরি করে।

২০১৮ সালে উইংটেক প্রায় ৩৬৩ কোটি ডলারে ডাচ কোম্পানি ফিলিপস থেকে নেক্সপেরিয়ার শতভাগ কিনে নেয়।

উল্লেখ্য, উইংটেককে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্র তাদের “এন্ট্রিটি লিস্ট”-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।

যদিও নেক্সপেরিয়া দাবি করেছে, তারা উইংটেকের থেকে আলাদাভাবে কাজ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের তাদের কার্যক্রমে তেমন প্রভাব পড়বে না।

তবে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র তাদের এন্ট্রিটি লিস্টের নিয়ম আরও কঠোর করে, যেখানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির মালিকানাধীন ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার থাকা কোম্পানিগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।

যদিও এখনো পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে, ডাচ সরকারের এই পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিয়মের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, তবে কম্পিউটার চিপ শিল্পের রফতানি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে দেশ দুটি ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করে থাকে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *