আদিম মানব প্রজাতিরা গাছের উপরে ওঠা এবং হাতিয়ার তৈরি – দুই কাজেই হাত ব্যবহার করত, নতুন গবেষণায় এমনটাই দেখা গেছে।
আমাদের হাত আমাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে অনেক কিছুই বলতে পারে। এমনকি, এটি আদিম মানব প্রজাতিদের ক্ষেত্রেও সত্যি। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি দুই প্রজাতির আদিম মানব, অস্ট্রালোপিথেকাস সেডিবা এবং হোমো নলেডি-র জীবাশ্ম হাত নিয়ে গবেষণা করেছেন। এই প্রজাতিগুলি প্রায় ২০ লক্ষ এবং ৩ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে বাস করত।
গবেষকরা এই জীবাশ্ম হাতগুলির আঙুলের হাড়ের ঘনত্ব থ্রিডি স্ক্যানিং-এর মাধ্যমে পরিমাপ করেছেন। তাঁদের অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে যে, উভয় প্রজাতিই তাদের হাত ব্যবহার করত গাছ বেয়ে ওঠার জন্য, যা তাদের গাছে চড়ার দক্ষতার প্রমাণ দেয়। একইসঙ্গে, তারা জিনিসপত্র ধরা এবং সেগুলির সঙ্গে কাজ করতেও পারদর্শী ছিল, যা হাতিয়ার তৈরির জন্য অপরিহার্য।
এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, মানুষের হাতের বিবর্তন একটি সরল পথে ঘটেনি। বরং, আদিম মানুষেরা একইসঙ্গে একাধিক ধরনের পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছিল। আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্টোরির জীবাশ্মবিদ স্যামার সায়েদা জানিয়েছেন, “সম্ভবত তারা দু’ পায়ে হেঁটে চলত এবং জিনিসপত্র বা হাতিয়ার ব্যবহার করত। আবার গাছ বা পাথরের খাঁজে চড়েও সময় কাটাত।
বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন না এমন একজন বিশেষজ্ঞ, স্মিথsonian-এর জীবাশ্মবিদ রিক পটস বলেছেন, “হাতের কার্যকারিতার বিবর্তনের ক্ষেত্রে, প্রথমে বানরের মতো এবং পরে মানুষের মতো – এমন সরলরৈখিক কোনো ধারণা নেই।
গবেষকরা বলছেন, সম্পূর্ণ জীবাশ্ম হাতের নমুনা পাওয়া খুবই কঠিন। তবে এই গবেষণায় ব্যবহৃত নমুনাগুলো আঙুলের উপর প্রযুক্ত বিভিন্ন শক্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে। চ্যাথাম ইউনিভার্সিটির জীবাশ্মবিদ এরিন মারি উইলিয়ামস-হাটালার মতে, “আমাদের চারপাশের জগৎকে অনুভব করার প্রধান উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো হাত।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস