ওয়েলসের মাটিতে খননকার্যের ফলে মধ্যযুগীয় যুগের নারীদের কঠিন জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। প্রত্নতত্ত্ববিদরা সম্প্রতি দক্ষিণ ওয়েলসে খননকার্য চালিয়েছিলেন, যেখানে তারা প্রায় চল্লিশ জন মানুষের কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছেন।
এই কঙ্কালগুলি প্রাথমিক মধ্যযুগীয় যুগের, যা প্রায় ৪০০ থেকে ১১০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
গবেষকদের মতে, কঙ্কালগুলির বেশিরভাগই নারী সম্প্রদায়ের। তাঁদের হাড়ের গঠন পরীক্ষা করে জানা গেছে, এই নারীরা সম্ভবত কঠিন জীবন যাপন করতেন।
সম্ভবত কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে তাঁদের শরীরে বাতের ব্যথা, হাড়ের সংযোগস্থলে ক্ষয় এবং ভাঙা হাড়ের মতো সমস্যা ছিল। অনেক আঘাত সারারও প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা তাঁদের কঠিন জীবন সংগ্রামের ইঙ্গিত দেয়।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ, অ্যান্ডি সিম্যান, এই খননকার্য পরিচালনা করেছেন।
তিনি জানান, তাঁদের খননকার্য থেকে জানা গেছে, সে সময়ের মানুষের জীবনযাত্রা খুব একটা স্বাস্থ্যকর ছিল না। তবে তাঁরা একে অপরের প্রতি যত্নবান ছিলেন।
উদাহরণস্বরূপ, ভাঙা হাড়গুলো জোড়া লাগানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও, কঙ্কালগুলির মধ্যে কিছু মানুষের উচ্চ সামাজিক মর্যাদা ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাঁদের সমাধিস্থলে পাওয়া গেছে ফ্রান্স থেকে আমদানি করা সুন্দর কাঁচের পাত্রের টুকরা।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, যদিও সমুদ্রের কাছাকাছি বসবাস করা সত্ত্বেও, সেই সময়ের মানুষেরা মাছ খেতেন না। তাঁদের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
শীঘ্রই এই কঙ্কালগুলি আবার সমাধিস্থ করা হবে এবং জনসাধারণের জন্য স্থানটি উন্মুক্ত করা হবে।
এই আবিষ্কার মধ্যযুগীয় সমাজে নারী ও সমাজের মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ওয়েলসের এই খননকার্য সেই সময়ের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছে, যা আমাদের অতীতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন