আতঙ্ক! অল্প বয়সেই ক্যান্সার: বাড়ছে কেন?

শিরোনাম: অল্প বয়সে বাড়ছে ক্যান্সার: নতুন গবেষণায় উদ্বেগের কারণ

বর্তমান বিশ্বে ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। সম্প্রতি, একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে, অল্পবয়সী মানুষের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়ছে। এই গবেষণাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত হয়েছে এবং এর ফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট (National Cancer Institute) -এর বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি করেছেন। তারা ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মানুষের ক্যান্সার বিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। এই গবেষণায় ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষের ক্যান্সার নির্ণয়ের তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, অল্প বয়সে ক্যান্সার বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করা।

গবেষণায় দেখা গেছে, স্তন ক্যান্সার (breast cancer), কোলন ও মলদ্বারের ক্যান্সার (colorectal cancer), কিডনি ক্যান্সার (kidney cancer), এবং জরায়ু ক্যান্সারের (uterine cancer) মতো কয়েকটি ক্যান্সারের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ক্যান্সারগুলির মধ্যে প্রায় ৬৩ শতাংশ ছিল নারীদেহে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধরনের পরিবর্তন গভীর কিছু ইঙ্গিত করে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, স্তন ক্যান্সারের বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি। অতিরিক্ত প্রায় ৪,৮০০ জনের মধ্যে এই ক্যান্সার শনাক্ত করা গেছে। এছাড়া, প্রত্যাশার চেয়ে ২,০০০ বেশি মানুষের মধ্যে কোলন ও মলদ্বারের ক্যান্সার, ১,৮০০ জনের বেশি কিডনি ক্যান্সার এবং ১,২০০ জনের বেশি জরায়ু ক্যান্সার সনাক্ত হয়েছে।

তবে, স্বস্তির বিষয় হল, অল্পবয়সী মানুষের মধ্যে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার তেমন বাড়েনি, যদিও কোলন ও মলদ্বার, জরায়ু এবং অন্ডকোষের ক্যান্সারে মৃত্যুর হার সামান্য বেড়েছে।

এই ক্যান্সার বৃদ্ধির কারণ এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অতিরিক্ত ওজন (obesity) একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। এছাড়া, ক্যান্সার সনাক্তকরণের আধুনিক পদ্ধতি এবং স্ক্রিনিং (screening) পদ্ধতির পরিবর্তনও প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করছে। উদাহরণস্বরূপ, দেরিতে সন্তান ধারণ করা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কারণ, গর্ভাবস্থা ও বুকের দুধ খাওয়ানো স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

অন্যদিকে, সব ধরণের ক্যান্সারের হার কিন্তু বাড়ছে না। ফুসফুস ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের মতো কিছু ক্যান্সারের প্রকোপ এই বয়সীদের মধ্যে কমেছে। ধূমপান কমে যাওয়ার কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার হ্রাস পেয়েছে এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে নিয়মিত পরীক্ষার (PSA testing) প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করার কারণে এমনটা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই গবেষণা ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশেও ক্যান্সার একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। তাই, এই ধরনের গবেষণা আমাদের দেশের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশেও ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধি এবং রোগ নির্ণয়ের উন্নত ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করা উচিত।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *