যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে এই সপ্তাহান্তে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়া গেছে, যা ভারী বৃষ্টিপাত, তীব্র বাতাস এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি করতে পারে। আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, ফ্লোরিডা থেকে নিউ ইংল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলীয় অঞ্চলে এর প্রভাব পড়তে পারে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একটি দুর্বল হয়ে যাওয়া শীতল বায়ুপ্রবাহের কারণে এই ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি হচ্ছে। এটি শনিবার (উল্লেখিত তারিখ) থেকে উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি বেশ কয়েক দিন ধরে চলতে পারে, যার ফলে বিশেষ করে উত্তর ক্যারোলিনাতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন্দ্র (Weather Prediction Center) এটিকে একটি “পূর্ণাঙ্গ” এবং “গুরুত্বপূর্ণ” ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড়টি যদি ক্যারোলিনার কাছাকাছি অবস্থান করে, তাহলে সেখানে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে এবং এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, যদি এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়, তাহলে মধ্য-আটলান্টিক এবং নিউ ইংল্যান্ডের উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সমুদ্র উত্তাল হতে পারে, যা সাঁতার কাটার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এছাড়াও, এর ফলে সমুদ্র উপকূলের ভাঙন আরও বাড়তে পারে। এর আগে, গত কয়েক সপ্তাহে তীব্র ঢেউয়ের কারণে উত্তর ক্যারোলিনার বাকস্টন (Buxton) অঞ্চলে অন্তত সাতটি খালি বাড়ি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পূর্বাঞ্চলীয় উত্তর ক্যারোলিনাতে কয়েক ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে আউটার ব্যাংকস (Outer Banks) অঞ্চলে কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় ৬ ইঞ্চি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আকস্মিক বন্যাও দেখা দিতে পারে।
শুক্রবার থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র বাতাস বইতে শুরু করবে এবং শনিবার ও রবিবার এর তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। আউটার ব্যাংকস অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৫০ মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) পর্যন্ত হতে পারে, যেখানে পূর্ব উত্তর ক্যারোলিনার মূল ভূখণ্ডে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২০ থেকে ৪০ মাইল (প্রায় ৩২ থেকে ৬৪ কিলোমিটার) পর্যন্ত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা বাড়ছে। এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলেই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে উপকূলীয় অঞ্চলে আরও বেশি প্রভাব ফেলছে।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতেও ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে, যা আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
বর্তমানে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস পরিষ্কারভাবে জানা যাচ্ছে না যে ঘূর্ণিঝড়টি কত দিন স্থায়ী হবে। তবে, এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জনগণকে সতর্ক থাকতে এবং জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ করেছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে এবং পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন