বাংলাদেশের সবুজ অঙ্গন: পরিবেশ-বান্ধব ঘাস জমির পরিচর্যা।
বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে, আমাদের চারপাশের পরিবেশকে সবুজ ও সুস্থ রাখতে প্রয়োজন সচেতনতা। বাড়ির আঙিনায় ঘাস জমি (lawn) তৈরি করা অনেকেরই শখ, তবে এর সঠিক পরিচর্যা পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, কিভাবে আপনার ঘাস জমিটিকে আরও পরিবেশ-বান্ধব করে তুলতে পারেন, সেই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলো।
প্রথমেই আসা যাক ঘাস জমির আকার কমানোর বিষয়ে। আপনার ঘাস জমির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করুন।
এটি কি হাঁটাচলার পথ হিসেবে, বসার স্থান হিসেবে, নাকি নিছক সৌন্দর্যের জন্য? যদি এর কিছু অংশ কমিয়ে আনা যায়, তবে তা একদিকে যেমন ভালো, তেমনই ঘাস জমির আশেপাশে কিছু বুনো ফুল ও ঘাস জন্মাতে দিন।
বুনো ঘাস ও ফুল পোকামাকড় ও অন্যান্য বন্য প্রাণীর আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। এতে আপনার বাগানে জীববৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পাবে।
দ্বিতীয়ত, ঘাস কাটার পরিমাণ কমানো উচিত।
ঘন ঘন ঘাস কাটার পরিবর্তে ঘাসগুলোকে একটু বড় হতে দিন। এতে ঘাস জমির জল সেচের চাহিদাও কমবে, যা পানির অপচয় রোধ করবে।
লম্বা ঘাস মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং পোকামাকড় ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য আশ্রয়স্থল তৈরি করে।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জল সেচের সঠিক ব্যবহার।
গ্রীষ্মকালে ঘাস জমির জন্য অতিরিক্ত জল দেওয়া পরিহার করা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ঘাস কিছুটা শুকিয়ে যায়, তবে এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।
বৃষ্টির জল পেলে এটি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য একটি বৃষ্টির জল ধারক ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিদ্যুৎ-চালিত ঘাস কাটার যন্ত্র ব্যবহার করা পরিবেশের জন্য একটি ভালো পদক্ষেপ। পেট্রোল-চালিত যন্ত্রের পরিবর্তে বিদ্যুৎ-চালিত যন্ত্র ব্যবহার করলে কার্বন নিঃসরণ কম হয়।
সার তৈরি: রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে বাড়িতে সার তৈরি করা যেতে পারে।
এক্ষেত্রে, বিভিন্ন গাছের পাতা ও অন্যান্য জৈব উপাদান মিশিয়ে সার তৈরি করা যেতে পারে।
পরিশেষে, ঘাস জমির আগাছা দমনের জন্য রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত নয়। আগাছা হাতে উপড়ে ফেলা অথবা প্রাকৃতিক উপায়ে দমন করার চেষ্টা করুন।
এসব পদ্ধতি অনুসরণ করে, আপনি আপনার ঘাস জমিটিকে পরিবেশ-বান্ধব করে তুলতে পারেন এবং প্রকৃতির প্রতি আপনার ভালোবাসার স্বাক্ষর রাখতে পারেন।
আসুন, সবাই মিলে আমাদের চারপাশের পরিবেশকে সবুজ ও সুন্দর করে তুলি।
তথ্য সূত্র: The Guardian