বিখ্যাত শিল্পী এড শিরানের নতুন একটি গান, ‘আজাজাম’, পারস্য সংস্কৃতি এবং এর প্রতি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পারস্যদের ভালোবাসার এক দারুণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
গানটি ফার্সি ভাষায় লেখা এবং এতে ঐতিহ্যবাহী পারস্য বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার একে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এই গানটি শুধু একটি প্রেমের গান নয়, বরং এটি শিল্পীর গভীর সংস্কৃতি-সচেতনতারও পরিচয় বহন করে।
‘আজাজাম’-এর সুরকার ও প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন ইরানি বংশোদ্ভূত সুইডিশ সঙ্গীত শিল্পী ইলা সালমানেজাদেহ।
গানের পশ্চিমা সুরের সঙ্গে পারস্যের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র, যেমন দফ ও সন্তুরের সংমিশ্রণ এটিকে একটি বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। যারা নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে, এই গান তাদের আপন ঐতিহ্যের কাছে ফিরে যেতে উৎসাহিত করছে।
গানটি যেন তাদের শিকড়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।
ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর অনেক পারসিক দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। বিভিন্ন কারণে তারা তাদের সংস্কৃতি থেকে দূরে চলে যান।
পশ্চিমা বিশ্বে ইরানের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, যা সন্ত্রাসবাদ, ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এমন পরিস্থিতিতে, শিরানের এই গানটি যেন তাদের সংস্কৃতিকে নতুন করে তুলে ধরেছে।
কৌতুক অভিনেতা মাজ জাবরানির মতে, “পশ্চিমের মিডিয়াতে আমাদের সম্পর্কে সাধারণত নেতিবাচক খবরই বেশি আসে। তাই যখন কোনো পশ্চিমা শিল্পী আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে ভালো কিছু করেন, তখন আমরা আনন্দিত হই।”
এই গানটি শুধুমাত্র একটি গান নয়, বরং এটি সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের একটি উদযাপন। যারা জন্মসূত্রে পারস্যের, তাদের কাছে এটি তাদের শিকড়ের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
যারা অভিবাসী বা উদ্বাস্তু, তাদের জন্য এটি তাদের জন্মভূমির প্রতি এক গভীর টানের সৃষ্টি করে। এটি তাদের সংস্কৃতিকে নতুন করে অনুভব করতে সাহায্য করে।
এড শিরানের এই গানটি পারস্য সংস্কৃতির প্রতি বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। এটি প্রমাণ করে যে, সঙ্গীত একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যা মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারে এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে সহায়ক হতে পারে।
গানটি যেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে, যেখানে সংস্কৃতিগুলো একে অপরের সঙ্গে মিলিত হতে পারে এবং নিজেদের ঐতিহ্যকে আরও ভালোভাবে তুলে ধরতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান