এড শিরানের নতুন গান ‘আজিজাম’ নিয়ে আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ফার্সি ভাষার এই গানটি পশ্চিমা সমালোচকদের চোখে হয়তো ততটা আকর্ষণীয় নয়, তবে ইরান এবং এর আশেপাশের সংস্কৃতিতে বসবাসকারী মানুষের মনে অন্যরকম ভালো লাগা তৈরি করেছে।
খবরটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে।
‘আজিজাম’ শব্দটির অর্থ হলো ‘প্রিয়’ অথবা ‘ভালোবাসার মানুষ’। গানটি তৈরিতে সাহায্য করেছেন সুইডেন প্রবাসী ইরানি বংশোদ্ভূত প্রযোজক ইলিয়া সালমানজাদেহ।
পশ্চিমা অনেক সমালোচক গানটিকে গতানুগতিক ধারার পপ গান হিসেবে অভিহিত করেছেন। কিন্তু গানটি প্রকাশের পর ইরানসহ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ইরানিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ইরানিরা সবসময় তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে। তাদের সংস্কৃতি, ভাষা, ইতিহাস এবং ঐতিহ্য পশ্চিমা বিশ্বে অনেক সময় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, ‘থার্টি হান্ড্রেড’ (300) সিনেমায় পারসিকদের বর্বর হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। এছাড়া, ‘আর্গো’ সিনেমাতেও ইরান এবং ইরানিদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দেওয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, যখন একজন জনপ্রিয় শিল্পী তাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন, তখন তা তাদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।
গানটিতে ইরানের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র যেমন – দাফ এবং সান্টুর ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও, জনপ্রিয় ইরানি শিল্পী আরাশ এবং অ্যান্ডি গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন, যা শ্রোতাদের আরও বেশি আকৃষ্ট করেছে।
শীঘ্র গানটির একটি সম্পূর্ণ ফার্সি সংস্করণও প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
শুধু গান নয়, এর ভিডিওটিও এরই মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মুক্তির দুই দিনের মধ্যে এটির ভিউয়ার সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ মিলিয়নের বেশি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও গানটি নিয়ে উন্মাদনা দেখা গেছে। অনেকেই গানটির সাথে নেচে তাদের আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন ইরানি বিবাহ ও উৎসবেও গানটি বাজানো হবে।
এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সংস্কৃতি সবসময় মানুষকে একত্রিত করতে পারে।
এড শিরান আগেও আফ্রিকার শিল্পী বার্না বয় এবং ফায়ারবয় ডিএমএল-এর সঙ্গে কাজ করেছেন। এমনকি কলম্বিয়ান শিল্পী জে বালভিনের সঙ্গে একটি গানের জন্য তিনি স্প্যানিশ ভাষাও শিখেছিলেন।
সমালোচকরা বলছেন, বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে শিরিন তার শ্রোতাদের সংখ্যা বাড়াচ্ছেন। তবে, গানের মাধ্যমে সংস্কৃতি বিনিময়ের এমন প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
সবশেষে, ‘আজিজাম’ গানটি যেন প্রমাণ করে, সঙ্গীতের কোনো সীমানা নেই। গানটি ইরানিদের সংস্কৃতি ও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি, যা বিশ্বজুড়ে মানুষের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান