টাইম স্কোয়ারে বক্সিং: সৌদি আরবের অর্থ, ক্রীড়া জগতের নতুন বাস্তবতা।
নিউ ইয়র্কের ঝলমলে টাইম স্কোয়ারে বক্সিং প্রতিযোগিতার আয়োজন নিয়ে এখন আলোচনার শেষ নেই। একদিকে যখন এর জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন বিশ্বজুড়ে বক্সিং প্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, তখন এর পেছনে থাকা সৌদি আরবের বিশাল বিনিয়োগ নিয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন।
এই পরিবর্তনের হাওয়ায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন খ্যাতিমান বক্সিং প্রমোটার এডি হিয়ার্ন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে হিয়ার্ন বলেন, “আসলে এটা ঘটতে চলেছে, এটা ভেবে এখনো আমার বিস্ময় লাগে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই আয়োজনের আগে পর্যন্ত আমি ভাবতাম, এটা সম্ভবত হবে না। আর এখন আমরা সেই ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা দূরে।”
শুক্রবার রাতের এই বিশেষ বক্সিং আসরটি ছিল মূলত আমন্ত্রিতদের জন্য, যেখানে অংশ নিয়েছিলেন রায়ান গার্সিয়া, ডেভিন হানি এবং টিওফিমো লোপেজের মতো তারকারা। ম্যানহাটনের কেন্দ্রস্থলে, ১০ ফুট উঁচু বেড়া এবং কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
হিয়ার্নের মতে, “টাইম স্কোয়ার বন্ধ করে দেওয়া একটি দারুণ দৃষ্টান্ত। প্রচারের চিরাচরিত ধারণায়, এখানে সম্ভবত বিপুল পরিমাণ দর্শক-শ্রোতা আসার সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু পরিস্থিতি ভিন্ন।”
আসলে, এই আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন সৌদি আরবের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব তুর্কি আল-শেখ।
সম্প্রতি তিনি ‘দ্য রিং’ ম্যাগাজিন কিনেছেন।
হিয়ার্ন আল-শেখের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “তাঁর অবিরাম চেষ্টা এবং সমস্যা সমাধানের আগ্রহের ফলেই ফিউরি বনাম উসিক, জশুয়া বনাম এনগান্নু এবং বেতেরবিয়েভ বনাম বিভোলের মতো লড়াইগুলো বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।”
তবে, এই পরিবর্তনের পেছনে নৈতিকতার প্রশ্নও রয়েছে।
অনেকে মনে করেন, সৌদি আরব খেলাধুলার মাধ্যমে তাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টা করছে, যা ‘স্পোর্টসওয়াশিং’ নামে পরিচিত।
হিউম্যান রাইটস গ্রুপগুলো দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
হিয়ার্ন অবশ্য সরাসরি এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
তাঁর মতে, “প্রত্যেক দেশেরই কিছু সমস্যা আছে। তবে খেলাধুলা সেখানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।”
বক্সিং জগতে সৌদি আরবের এই বিপুল বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে একটি বড় পরিবর্তন।
হিয়ার্ন মনে করেন, “বক্সিংয়ে একঘেয়েমি চলে আসে। একই ওজন মাপা, একই সংবাদ সম্মেলন—এসবের বাইরে নতুন কিছু দরকার।
আর আল-শেখ সেটাই করছেন।” তিনি আরও যোগ করেন, “বক্সিং এখনো অনেক দূর যাবে।”
ভবিষ্যতে এই পরিবর্তনের ফলে বক্সিং কতটা লাভবান হবে, নাকি এতে অন্য কোনো হিসাব-নিকাশ রয়েছে, তা সময়ই বলবে।
তবে এ কথা স্পষ্ট যে, খেলাধুলার এই নতুন বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে নতুন করে ভাবতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান