বিখ্যাত পিয়ানোবাদক এডি পামেরি: সুরের জগতে শোকের ছায়া!

বিখ্যাত ল্যাটিন জ্যাজ শিল্পী এডি পামেরি-এর প্রয়াণ, সঙ্গীতের জগতে শোকের ছায়া।

সঙ্গীত জগত হারালো এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে। ৮৮ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন ল্যাটিন জ্যাজ সঙ্গীতের কিংবদন্তী শিল্পী এডি পামেরি। বুধবার (তারিখ উল্লেখ করতে হবে) নিউ জার্সিতে নিজের বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে সঙ্গীত প্রেমীদের মধ্যে।

এডি পামেরি ছিলেন একাধারে পিয়ানোবাদক, সুরকার এবং ব্যান্ড লিডার। তিনি ছিলেন র‍্যুম্বা এবং ল্যাটিন জ্যাজ ধারার অন্যতম উদ্ভাবক শিল্পী। সঙ্গীতের প্রতি তাঁর নিবেদন এবং নতুনত্বের অনুসন্ধিৎসা তাঁকে এনে দিয়েছে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি।

পামেরি ল্যাটিন সঙ্গীতের প্রথম শিল্পী যিনি গ্র্যামি পুরস্কার জয় করেছিলেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি মোট আটটি গ্র্যামি জিতেছেন। সঙ্গীতের এই সম্মানজনক পুরস্কার তাঁর প্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ।

পামারির জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৫ই ডিসেম্বর, নিউ ইয়র্কের স্প্যানিশ হারলেমে। সেই সময় সঙ্গীত ছিল সেখানকার মানুষের কাছে জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা উপায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি পিয়ানো বাজানো শুরু করেন।

তবে তাঁর কাকা-র অর্কেস্ট্রা-য় যোগ দেওয়ার পর তিনি ড্রামস বাজানো শুরু করেন। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি আবার পিয়ানোতেই ফিরে আসেন। একবার তিনি বলেছিলেন, “আমি একজন হতাশ ড্রামবাদক, তাই পিয়ানোর ওপর সেই ঝাল মেটাই।

১৯৭৫ সালে ‘দ্য সান অফ ল্যাটিন মিউজিক’ অ্যালবামের জন্য তিনি প্রথম গ্র্যামি জেতেন। এরপরও তিনি নিয়মিতভাবে সঙ্গীত পরিবেশন করে গেছেন। এমনকি করোনা মহামারীর সময়েও তিনি লাইভস্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গীত পরিবেশনা চালিয়ে গিয়েছেন।

তাঁর সঙ্গীত জীবনের দীর্ঘ পথচলায় তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন, যা আজও সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে গেঁথে আছে।

পামারির উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ভ্যামোনস পা’ল মন্টে’, ‘হারলেম রিভার ড্রাইভ’, এবং ‘মাস্টারপিস’-এর মতো অ্যালবামগুলো। তিনি শিল্পী হিসাবে যেমন জনপ্রিয় ছিলেন, তেমনই অন্যদের অনুপ্রাণিত করতেও তাঁর জুড়ি ছিল না।

তিনি ‘ফ্যানিয়া অল-স্টার্স’ এবং ‘টিকো অল-স্টার্স’-এর মতো বিখ্যাত শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করেছেন।

সঙ্গীতের প্রতি তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য ইয়েল ইউনিভার্সিটি তাঁকে ‘চাব ফেলোশিপ’ পুরস্কারে সম্মানিত করে। শুধু তাই নয়, তিনি বিশ্বজুড়ে ল্যাটিন জ্যাজ এবং সালসা-কে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। উত্তর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া এবং ইউরোপের মতো বিভিন্ন দেশে তিনি তাঁর সঙ্গীতের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন।

এডি পামেরি-র প্রয়াণে সঙ্গীতের জগতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর গান, তাঁর সুর, তাঁর সৃষ্টিশীলতা সবসময় সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *