বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর: মিশরে এক অত্যাশ্চর্য উন্মোচন!

মিশরে উন্মোচন করা হলো বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর, যা একটি একক সভ্যতার প্রতি উৎসর্গীকৃত। গিজার সুবিশাল পিরামিডের কাছে অবস্থিত এই অত্যাশ্চর্য ‘গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম’ (জিইএম) প্রাচীন মিশরীয় সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি। শনিবার এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করা হয়, যেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এই জাদুঘরটি নির্মাণে প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো পর্যটকদের আকৃষ্ট করে দেশটির অর্থনীতিকে চাঙা করা। দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে মিশরের পর্যটন শিল্পে মন্দা দেখা গিয়েছিল। নতুন এই জাদুঘর সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাদুঘরটিতে ৫০,০০০-এর বেশি প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে, যা প্রাচীন মিশরের জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হলো ফারাও তুতেনখামুনের সমাধিস্থল থেকে পাওয়া অমূল্য প্রত্নতত্ত্বের বিশাল সংগ্রহ। ১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার তুতেনখামুনের সমাধিস্থল আবিষ্কার করেন। এই জাদুঘরে প্রথমবারের মতো ফারাওয়ের সম্পূর্ণ সংগ্রহ একসাথে প্রদর্শিত হবে।

এর মধ্যে রয়েছে তার তিনটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শয্যা, ছয়টি রথ, সোনার সিংহাসন, সোনার কফিন এবং সোনার মুখোশ।

জাদুঘরের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশাল আকারের কাঁচের তৈরি একটি সম্মুখভাগ, যা গিজার পিরামিডের আদলে তৈরি করা হয়েছে। ভেতরে প্রবেশ করলেই দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন প্রাচীন মূর্তি দিয়ে সজ্জিত একটি ছয় তলা সিঁড়ি, যা মূল গ্যালারির দিকে নিয়ে যায়।

জাদুঘর থেকে পিরামিড পর্যন্ত একটি সেতু তৈরি করা হয়েছে, যা দর্শনার্থীদের হেঁটে অথবা বৈদ্যুতিক গাড়িতে করে যাতায়াতের সুযোগ করে দেবে।

মিশর সরকার ২০৩২ সাল নাগাদ বছরে ৩ কোটি পর্যটকের আগমন আশা করছে। উল্লেখ্য, শুধু ২০২৪ সালেই প্রায় ১ কোটি ৫৭ লক্ষ পর্যটক মিশর ভ্রমণ করেছেন, যা দেশটির জিডিপির ৮ শতাংশের বেশি অবদান রেখেছে।

আগামী মঙ্গলবার থেকে জনসাধারণের জন্য জাদুঘরটি খোলা হবে। সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী যে কেউ এই জাদুঘরে এসে প্রাচীন মিশরের গৌরবোজ্জ্বল দিনগুলোর সাক্ষী হতে পারবেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *