এল চাপোর পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে, দর কষাকষির অংশ?

মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক সম্রাট ‘এল চাপো’র পরিবারের কয়েকজন সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছেন। মেক্সিকোর নিরাপত্তা সচিব ওমর গার্সিয়া হারফুচ মঙ্গলবার রেডিও ফরমুলার সাথে আলাপকালে জানান, সম্ভবত মাদক মামলার শুনানির জন্য আলোচনার অংশ হিসেবেই তারা আমেরিকায় এসেছেন।

‘এল চাপো’র ছেলে ওভিদিও গুজমান লোপেজের বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে, এবং তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বিচারের অপেক্ষায় আছেন।

ওভিদিও, যিনি তার বাবার প্রতিষ্ঠিত সিনালোয়া কার্টেলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। এর আগে, ২০১৯ সালেও তাকে একবার আটক করা হয়েছিল, কিন্তু পরে সহিংস পরিস্থিতির কারণে তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় মেক্সিকান কর্তৃপক্ষ।

যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রথমে ওভিদিও নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও, সম্প্রতি তিনি তার বক্তব্য পরিবর্তনের জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন। যদিও এই চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

নিরাপত্তা সচিব গার্সিয়া হারফুচ মনে করেন, ওভিদিও’র পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে আগমন এই আলোচনারই অংশ।

বিভিন্ন মেক্সিকান সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ওভিদিও’র পরিবারের ১৭ জন সদস্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য সিএনএন মেক্সিকোর নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এবং মার্কিন বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

ওভিদিও ছাড়াও, এল চাপোর আরও তিন ছেলে – যারা সম্মিলিতভাবে ‘লস চাপিতোস’ নামে পরিচিত – তাদের বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। ধারণা করা হয়, তারা ছোটবেলা থেকেই কার্টেলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং তাদের বাবার গ্রেপ্তারের পর তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

‘লস চাপিতোস’-এর অন্য দুই সদস্য, ইভান আর্চিভালদো এবং জেসুস আলফ্রেদো গুজমান সালাজার এখনো পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রত্যেকে ১ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১১০ কোটি টাকার সমান।

ওভিদিও’র ভাই জোয়াকিন গুজমান লোপেজকেও গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফ্লাইটে করে আসার সময় গ্রেপ্তার করা হয়। মেক্সিকোর নিরাপত্তা সচিব রসা ইসেলা রদ্রিগেজ এর আগে জানিয়েছিলেন, জোয়াকিন তার ভাই ওভিদিও’র সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আত্মসমর্পণের বিষয়ে একটি চুক্তিতে এসেছিলেন।

তবে ওভিদিও’র আইনজীবী এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

এই ঘটনার সূত্র ধরে, মেক্সিকোর মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মাদক চোরাচালান দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন-এর প্রতিবেদন অবলম্বনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *