মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মের আবহাওয়ার পূর্বাভাস: উষ্ণতা বৃদ্ধির আশঙ্কা।
এই মুহূর্তে বসন্তকাল চললেও, গ্রীষ্মের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আসন্ন গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এল নিনোর প্রভাব কমে গেলেও গরম থেকে মুক্তি নেই, বরং পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে।
এল নিনো এবং লা নিনার প্রভাব।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণতা পরিবর্তনের ফলে এল নিনো দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং গ্রীষ্মের শুরুতেই এর প্রভাব প্রায় থাকবে না। এল নিনো হলো একটি প্রাকৃতিক জলবায়ু প্রক্রিয়া, যেখানে নিরক্ষীয় অঞ্চলের সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে।
এর বিপরীত অবস্থা হলো লা নিনা, যেখানে তাপমাত্রা কমে যায়। এই দুটি ঘটনাই বিশ্বের আবহাওয়ার ওপর প্রভাব ফেলে। সাধারণত, গ্রীষ্মকালে এল নিনো বা লা নিনার প্রভাব শীতকালের মতো স্পষ্ট হয় না।
উষ্ণতার পূর্বাভাস।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকতে পারে। বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।
ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং নেভাদার মতো রাজ্যগুলোতে তীব্র গরম অনুভূত হতে পারে। অতীতের গরমের রেকর্ড বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই অঞ্চলের মানুষের গরমের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত।
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিনিক্স শহরে গড় তাপমাত্রা ছিল ১০২.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস), যা শহরটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে খরা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
অন্যদিকে, পূর্বাঞ্চলে, বিশেষ করে উপসাগরীয় উপকূল থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। এর কারণ হতে পারে সাধারণ বৃষ্টি অথবা ঘূর্ণিঝড়।
হারিকেনের পূর্বাভাস।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, লা নিনার প্রভাব এবং সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে আটলান্টিক মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বাড়তে পারে। সাধারণত, লা নিনার সময়ে ঘূর্ণিঝড় তৈরির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের উপকূল এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। এর ফলে গ্রীষ্মকালে চরম আবহাওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।
অতীতের বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০১৬ এবং ২০২০ সালের গ্রীষ্মকালে এল নিনোর দুর্বল প্রভাবের কারণে তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের এই ধরনের আবহাওয়ার পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্যও উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
কারণ, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতেও আবহাওয়ার চরম রূপ দেখা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আসন্ন গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরম এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, সেখানকার মানুষসহ সকলকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন