টেনিস খেলোয়াড়দের অনলাইনে আক্রমণের শিকার হওয়াটা এখন যেন একটি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি, ইউক্রেনের শীর্ষস্থানীয় টেনিস খেলোয়াড় এলিনা স্বি communicationনা অনলাইনে ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
কানাডায় অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল ব্যাংক ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে নাওমি ওসাকার কাছে হারের পরেই এই ঘটনা ঘটে। খেলা শেষ হওয়ার পর, ক্ষিপ্ত জুয়াড়িদের কাছ থেকে আসা বিদ্বেষপূর্ণ বার্তাগুলোতে স্বিতোলিনার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এইসব বার্তায়, তাকে সরাসরি মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর স্বামী, ফরাসি টেনিস খেলোয়াড় গেইল মঁফিসকে নিয়েও বর্ণবাদী মন্তব্য করা হয়।
জানা যায় আক্রমণকারীরা রাশিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, স্বিতোলিনার প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করে।
বিষয়টি নিয়ে এলিনা স্বিতোলিনা তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একজন খেলোয়াড় হওয়ার আগে, আমি একজন মা। আপনারা যেভাবে নারী এবং মায়েদের সঙ্গে কথা বলেন, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
এই ঘটনার পরে, টেনিস বিশ্বে অনলাইন সহিংসতার বিষয়টি আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে। উইমেন’স টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (WTA) এবং ইন্টারন্যাশনাল টেনিস ফেডারেশন (ITF) এর মতে, খেলোয়াড়দের প্রতি অনলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের মূল কারণ হলো খেলা নিয়ে জুয়া খেলা।
তাদের মতে, জুয়া খেলার প্রবণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের আক্রমণের ঘটনাও বাড়ছে।
প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে প্রায় ৪৫৮ জন টেনিস খেলোয়াড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আট হাজারের বেশি আপত্তিকর মন্তব্য ও পোস্টের শিকার হয়েছেন। উদ্বেগের বিষয় হলো, এর মধ্যে ৪০ শতাংশ আক্রমণ এসেছে জুয়াড়িদের কাছ থেকে।
শুধু স্বিতোলিনাই নন, এর আগে ব্রিটিশ খেলোয়াড় কেটি বুলটারও একই ধরনের অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। ফ্রেঞ্চ ওপেনে খেলার সময় তিনি ও তাঁর পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
বুলটার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, অনলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ এখন যেন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এর পেছনে জুয়াড়িদের হাত রয়েছে।
খেলাধুলায় বাজি ধরা বা অনলাইন স্পোর্টস বেটিং বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে, খেলোয়াড়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং অনলাইনে ঘৃণামূলক মন্তব্য প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: CNN