এলোন মাস্কের ঘুম কেড়ে নেওয়া সেই সমস্যা! সমাধান খুঁজছেন অপ্রত্যাশিত মিত্ররা

বিশ্বজুড়ে জন্মহার হ্রাসের প্রবণতা: বিতর্ক ও তার প্রভাব

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা হ্রাসের বিষয়টি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে জন্মহার কমে যাওয়া এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।

এমন একটি প্রেক্ষাপটে, টেক্সাসের অস্টিনে অনুষ্ঠিত হলো ‘নেটাল কনফারেন্স’ (NatalCon)। এই সম্মেলনে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পক্ষে মতপ্রকাশকারীরা একত্রিত হয়েছিলেন, যাদের মূল আগ্রহ হলো জন্মহার বাড়ানো। তাদের এই কার্যক্রম ‘প্রোন্যাটালিজম’ নামে পরিচিত।

প্রোন্যাটালিস্টদের মতে, কম জন্মহার অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা এবং সভ্যতার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়তে পারে। তারা মনে করেন, বেশি সংখ্যক শিশুর জন্ম দেওয়া এই সমস্যার একমাত্র সমাধান।

এই ধারণার অনুসারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমর্থন জুগিয়েছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। তিনি প্রায়ই সামাজিক মাধ্যমে এই সংক্রান্ত বার্তা প্রচার করেন।

নেটাল কনফারেন্সে বক্তারা তাদের উদ্বেগের কথা জানান এবং জন্মহার বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। সম্মেলনে আসা লোকজনের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন পেশা ও মতাদর্শের ছিলেন, যাদের মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্মহার বাড়ানো।

সম্মেলনে বক্তারা বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরেন, যেখানে জন্মহার কমে যাওয়ার কারণে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এবং কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমছে।

অন্যদিকে, এই প্রোন্যাটালিজম ধারণার সমালোচকেরও অভাব নেই। তাদের মতে, জনসংখ্যা হ্রাসের বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে দেখা হচ্ছে। তারা মনে করেন, অভিবাসন এই সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।

তাদের মতে, জন্মহার বাড়ানোর চেষ্টা না করে বয়স্ক মানুষের জন্য উপযুক্ত সুযোগ তৈরি করা এবং অভিবাসীদের গ্রহণ করাই শ্রেয়।

কনফারেন্সে আসা অনেক অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেন। এমনকি এই সম্মেলনে কিছু প্রতিবাদও হয়েছে, যেখানে সম্মেলনের কতিপয় বক্তার বিরুদ্ধে বর্ণবাদ এবং জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের ধারণাকে সমর্থন করার অভিযোগ আনা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জন্মহার কমার কারণে সমাজের উপর বিভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। কর্মীর অভাব, বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যখাতে চাপ—এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে, জনসংখ্যা কমে যাওয়া মানেই যে বিপর্যয় নেমে আসবে, তেমনটা নাও হতে পারে।

এই সম্মেলনে একটি বিশেষ দিক ছিল—বিবাহযোগ্য তরুণ-তরুণীদের জন্য একটি মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে তারা জীবনসঙ্গী খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

আলোচনা-সমালোচনার ঊর্ধ্বে, জন্মহার কমার বিষয়টি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক উদ্বেগে পরিণত হয়েছে। এই বিষয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে এবং এর প্রভাব সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের মতামত পাওয়া যাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *