ডগ-এর দায়িত্ব ছাড়ছেন মাস্ক, কাটছাঁট নিয়ে মুখ খুললেন

**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয় সংকোচনের মিশনে এলন মাস্ক, ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা**

ওয়াশিংটন থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দপ্তরগুলোতে ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে গঠিত একটি বিশেষ প্রকল্পের প্রধান হিসেবে কাজ করা এলন মাস্ক তার দায়িত্ব কমিয়ে আনতে প্রস্তুত হচ্ছেন। তবে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো পর্যন্ত রয়েছে অনেক ধোঁয়াশা।

জানা গেছে, মাস্কের নেতৃত্বে পরিচালিত এই প্রকল্পে সরকারি কর্মীদের ছাঁটাইয়ের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে ইতোমধ্যেই তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমনকি, তার মালিকানাধীন বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টেসলার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ হয়েছে।

হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মাস্ক বলেন, ‘বিষয়টা বেশ মজার যে আমাদের ‘DOGE’ আছে।’ (এখানে ‘DOGE’ বলতে মাস্কের সরকারি প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত রূপ বোঝানো হচ্ছে)। তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টা কি হাস্যকর নয়? আমরা কি কোনো সিমুলেশনে আছি? একসময় এটা তো একটা ‘মিম কয়েন’ ছিল। কিভাবে আমরা এখানে এলাম?’

মাস্ক জানান, তিনি এখন তার ব্যবসায় বেশি মনোযোগ দিতে চান, তাই সরকারি দায়িত্ব কমিয়ে দেবেন। তবে এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি। সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘নিরন্তর সমালোচিত হওয়াটা খুব একটা আনন্দের নয়। গাড়িগুলো জ্বলতে দেখলে ভালো লাগে না।’

মাস্কের দাবি, এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৬০ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করেছেন। যদিও তার মূল লক্ষ্য ছিল ১ ট্রিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা, যা এখনো অনেক দূরে। তিনি বলেন, ‘সরকার এবং কংগ্রেস কতটুকু পর্যন্ত এই কষ্ট সহ্য করতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।’

এই প্রকল্পের কর্মপরিধি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রিসভার সঙ্গে তার কিছু মতবিরোধ হয়েছে বলেও জানান মাস্ক। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলে মাস্ক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আমাদের কি এরই মধ্যে একটি নজরদারি ব্যবস্থা নেই?’ তিনি আরও জানান, জালিয়াতি বন্ধ করতে এই প্রকল্পের কর্মীদের কিছু তথ্য যাচাই করতে হয়।

প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাস্ক বলেন, ‘DOGE একটা জীবনযাত্রা, অনেকটা বৌদ্ধধর্মের মতো।’ তিনি কি প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে তার পদটি ধরে রাখবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় রাখব।’

২০২৬ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পের কাজ চলবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি প্রেসিডেন্ট চান, তাহলে আমরা সেই তারিখ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাব।’

নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে মাস্ক প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন। সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়েছে এবং প্রায়ই তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।

মাস্ক জানিয়েছেন, তিনি প্রশাসনের প্রথম কয়েক মাস এই প্রকল্পের কাজে সপ্তাহে সাত দিন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন এবং হোয়াইট হাউজের লিংকন বেডরুমেও ছিলেন।

বর্তমানে তিনি সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন এই প্রকল্পে সময় দেন এবং ওয়াশিংটনে তার উপস্থিতিও কমিয়ে দিয়েছেন। মাস্ক আরও জানান, বিশেষ সরকারি কর্মচারী হিসেবে তিনি বছরে সর্বোচ্চ ১৩০ দিন কাজ করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *