এলোন মাস্ক, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী, সম্প্রতি মার্কিন বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে এক ধারাবাহিক আক্রমণ শুরু করেছেন। তার এই সমালোচনার মূল কারণ হলো, বিচারকদের কিছু রায় যা মাস্কের একটি সরকারি কার্যক্রম, ‘ডগ’-এর বিরুদ্ধে গেছে।
এই কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে বর্তমানে একাধিক মামলা চলছে।
জানা গেছে, মাস্ক তার মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) এই বিচারকদের ‘অতি-বামপন্থী’ এবং ‘বিচার বিভাগের প্রতিপক্ষ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এমনকি তিনি বিচারকদের অভিশংসন করার জন্য আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মাস্কের এমন আচরণের পেছনে রয়েছে তার ‘ডগ’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আসা একের পর এক আইনি বাধা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারে কর্মী ছাঁটাই এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তথ্যে প্রবেশের চেষ্টা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মাস্কের এই পদক্ষেপ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং সরকারের স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে গুরুতর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে, বিচারকরা তাদের উপর আসা হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস এক বিরল বিবৃতিতে বলেছেন, বিচারকদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে তাদের অভিশংসন করা উপযুক্ত পদক্ষেপ নয়।
মাস্কের ‘ডগ’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আসা আইনি লড়াইগুলো মূলত কর্মীদের ছাঁটাই এবং গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। মেরিল্যান্ডের একটি আদালত মাস্কের এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইউএসএআইডি-এর কার্যক্রম বন্ধ করাকে অসাংবিধানিক হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এছাড়া, সোশ্যাল সিকিউরিটি ডেটা সিস্টেমে প্রবেশাধিকারের বিষয়েও আদালত মাস্কের দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
মাস্কের এই কার্যক্রমের সঙ্গে এল সালভাদর ও ইসরায়েলের মতো দেশগুলির বিচার বিভাগের সংস্কারের একটি যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। মাস্ক এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাজিব বুকেলেকে সমর্থন করেছেন, যিনি দেশের বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছেন।
মাস্কের এই পদক্ষেপগুলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান