মহাকাশে ফের ধাক্কা! বিস্ফোরিত হলো মাস্কের স্পেসএক্স রকেট!

এলোন মাস্কের স্পেসএক্স রকেটের পরীক্ষা আবারো ব্যর্থ, উদ্বেগে নাসা।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিশনে বড় ধাক্কা লেগেছে। সম্প্রতি, এলোন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স কোম্পানির স্টারশিপ রকেটের একটি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণকালে বিস্ফোরণ ঘটে।

এটি ছিল স্টারশিপ প্রকল্পের ধারাবাহিক ব্যর্থতার চতুর্থ ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে, ২০২৭ সালের মধ্যে নভোচারীদের চাঁদে ফেরানোর যে লক্ষ্যমাত্রা, তা পূরণ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

নাসা এই মিশনে স্পেসএক্সকে প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা) প্রদানের চুক্তি করেছে।

প্রযুক্তি বিশ্বে উদ্ভাবনী কাজের জন্য পরিচিত এলোন মাস্ক বর্তমানে তাঁর অন্যান্য ব্যবসায়ও মনোযোগ দিচ্ছেন। এই সময়ে স্টারশিপের এই ব্যর্থতা তাঁর জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

মাস্কের অন্যান্য কোম্পানি, যেমন টেসলা এবং এক্সএআইও নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সম্প্রতি, টেসলার স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি পরিষেবা চালু করার কথা ছিল।

তবে, এই প্রকল্পের শুরুতেই টেক্সাসের আইনপ্রণেতারা এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছেন। এছাড়া, টেসলার শেয়ারের দামও কিছুটা কমেছে।

ইউরোপের বাজারে, যেখানে টেসলার বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, সেখানে চীনা কোম্পানি বিওয়াইডি-র কাছে তারা পিছিয়ে পড়েছে।

এদিকে, মাস্কের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) কোম্পানি, এক্সএআই-এর পরিস্থিতিও খুব একটা ভালো নয়। ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কোম্পানিটি প্রতি মাসে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) খরচ করছে, যেখানে তাদের আয় খুবই সীমিত।

যদিও মাস্ক এই বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে, মাস্ক বরাবরই এই ধরনের ব্যর্থতাকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। স্টারশিপের এই বিস্ফোরণের পর তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মজা করে মন্তব্য করেছেন এবং এর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন।

তবে, এই মুহূর্তে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ স্টারশিপকে মঙ্গল গ্রহে পাঠানোর যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তিনি প্রকাশ করেছিলেন, তা পূরণ হওয়া কঠিন বলেই মনে হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, স্পেসএক্সের প্রকৌশলীরা এই ধরনের ব্যর্থতাকে তাদের ডিজাইন পদ্ধতির একটি অংশ হিসেবে দেখেন। তাঁরা স্বল্প খরচে দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার ওপর জোর দেন, যেটাকে “দ্রুত পুনরাবৃত্তিমূলক উন্নয়ন” (rapid iterative development) প্রক্রিয়া বলা হয়।

তাঁদের মতে, এর মাধ্যমে দ্রুত রকেটের নকশা তৈরি করা যায়, যা ধীরে ধীরে এবং সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করার চেয়ে বেশি কার্যকর। তবে, এই ধরনের ধারাবাহিক ব্যর্থতা তাঁদের প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *