১ ট্রিলিয়ন ডলার: মাস্কের জন্য এত টাকা কেন?

টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের জন্য বিশাল অঙ্কের বেতন প্রস্তাব করেছে টেসলার পরিচালনা পর্ষদ। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী দশ বছরে মাস্কের হাতে আসতে পারে অতিরিক্ত ৪২ কোটি ৩৭ লক্ষ শেয়ার।

এই শেয়ারের বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা হিসাব করলে পাওয়া যাবে বিশাল একটি অঙ্ক।

শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য পেশ করা এই বেতন প্যাকেজের মূল উদ্দেশ্য হলো, টেসলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাস্ককে আরও বেশি উৎসাহিত করা। টেসলার পরিচালনা পর্ষদ মনে করে, মাস্কের নেতৃত্বগুণ কোম্পানির জন্য অপরিহার্য।

বর্তমানে মাস্কের মালিকানাধীন টেসলার শেয়ারের পরিমাণ ১৩ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে তিনি যদি টেসলার পরিচালনা থেকে দূরে চলে যান, তবে কোম্পানির ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

তাই, কোম্পানি চায় মাস্ক যেন টেসলার সঙ্গেই থাকেন।

জানা গেছে, মাস্ক নাকি এমন একটি নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন, যা তাঁকে টেসলার নেতৃত্ব দিতে আরও বেশি আগ্রহী করবে। মাস্কের নিজের অন্যান্য ব্যবসা, যেমন স্পেসএক্স, স্টারলিঙ্ক এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ক প্রতিষ্ঠান xAI-তেও মনোযোগ রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে টেসলার পরিচালনা থেকে তিনি দূরে চলে যেতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকে এই বেতন প্যাকেজের প্রস্তাব।

তবে, এই বিশাল অঙ্কের শেয়ার পেতে হলে টেসলাকে কিছু মাইলফলক অর্জন করতে হবে। কোম্পানিকে যদি ৮.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার মূল্যে পৌঁছাতে হয়, তবেই মাস্ক এই শেয়ারগুলো পাবেন।

বিশ্লেষকদের মতে, টেসলার জন্য এই লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে না।

অন্যদিকে, মাস্কের সমালোচকরা বলছেন, অতীতেও মাস্ক বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও, সেগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যেমন, স্বয়ংক্রিয় গাড়ি তৈরির ঘোষণা তিনি ২০১৪ সাল থেকেই দিয়ে আসছেন, যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

তবে, টেসলার শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, মাস্কের দূরদৃষ্টি এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনাগুলো কোম্পানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের মতে, এই বিশাল অঙ্কের বেতন প্যাকেজ কোম্পানির উন্নতিতে সহায়তা করবে।

কারণ, এর মাধ্যমে মাস্কের আগ্রহ কোম্পানির প্রতি আরও বাড়বে।

বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, টেসলার এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন মাস্ককে ধরে রাখবে, তেমনি কোম্পানির উন্নতিতে সহায়ক হবে। কারণ, মাস্কের নেতৃত্বগুণ এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা টেসলার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই বেতন প্যাকেজের বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন পাওয়া গেলে, প্রযুক্তি বিশ্বে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হবে। এর মাধ্যমে, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের বেতন কাঠামো এবং তাঁদের কোম্পানির প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *