এলোন মাস্কের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ছোট ব্যবসার পাওনা পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছে। এই কারণে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন, এমনকি দেউলিয়া পর্যন্ত হয়েছেন।
সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, টেসলা, স্পেসএক্স এবং এক্সে (সাবেক টুইটার) কর্মরত অনেক ঠিকাদার সময় মতো বিল পাননি।
টেক্সাসে অবস্থিত টেসলার একটি বিশাল কারখানার নির্মাণকাজের সাথে জড়িত ছিলেন জেনিফার মেইসনার। তার পাইপ ওয়েল্ডিং ব্যবসার জন্য টেসলার কাছ থেকে বড় অঙ্কের একটি চুক্তি পাওয়ার পর তিনি ভেবেছিলেন, এটাই তার ব্যবসার মোড় ঘোরানোর সুযোগ।
কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টো। মেইসনারের অভিযোগ, টেসলার কাছ থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় তিনি ব্যক্তিগত এবং পেশাগতভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছেন। বড়দিনের সময় তিনি তার কর্মীদের বেতন দিতে পারেননি।
সিএনএনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাস্কের কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ না করার অভিযোগ নতুন নয়। শুধু টেক্সাসেই, গত পাঁচ বছরে টেসলার বিরুদ্ধে ১১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের নির্মাণ বিষয়ক অভিযোগ জমা পড়েছে।
এর মধ্যে এখনো প্রায় ২৪ মিলিয়ন ডলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে বকেয়া রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, টেসলা, স্পেসএক্স এবং এক্সে কাজ করা অনেক ছোট ব্যবসার মালিক মাসের পর মাস বিল পরিশোধের জন্য অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়েছেন। অনেক সময় বিল পরিশোধ করা হয়েছে অনেক দেরিতে।
সময় মতো অর্থ না পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মচারী এবং ব্যবসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। মেইসনার জানান, টেসলার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর তার ব্যবসার আয় বেড়েছিল এবং তিনি আরও কর্মী নিয়োগ করেছিলেন।
কিন্তু বিল পরিশোধ না হওয়ায় তিনি চরম আর্থিক সংকটে পড়েন।
আরেকটি ঘটনা হলো, ফুল সার্কেল টেকনোলজিস নামের একটি কোম্পানি টেসলার টেক্সাসের কারখানায় নিরাপত্তা ক্যামেরা ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ ও স্থাপনের কাজ করেছিল। তারা জানায়, টেসলা তাদের প্রায় ৬ লক্ষ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা) পরিশোধ করেনি।
ফলে, কোম্পানিটি দেউলিয়া হতে বাধ্য হয়।
এই বিষয়ে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সাধারণত বড় ব্যবসায়ীরা সময়মতো বিল পরিশোধ করেন না। বিশেষ করে, মাস্কের কোম্পানিগুলোতে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
মাস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কর্মীদের বেতন কমানো এবং বাজেট সংকোচনের দিকে বেশি মনোযোগ দেন, যা অনেক সময় ব্যবসার ক্ষতি করে।
তবে টেসলা বা মাস্কের অন্য কোনো কোম্পানি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তথ্যসূত্র: সিএনএন