বিদ্যুৎ বিল নিয়ে দুঃসংবাদ! স্বস্তি নাকি গভীর সঙ্কট?

বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামের অস্থিরতা এখনো অব্যাহত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে বেড়েছে গ্যাসের দাম, যার প্রভাব পড়েছে শিল্প ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়।

উন্নত দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে মারাত্মকভাবে। সম্প্রতি, ব্রিটেনের বাজারে আসন্ন গ্রীষ্মে বিদ্যুতের বিল কিছুটা কমার সম্ভাবনা দেখা দিলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন সংকট এখনো কাটেনি।

খবরটি বাংলাদেশের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ জ্বালানি সংকট একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং এর প্রভাব থেকে আমরাও মুক্ত নই।

যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, অফগেম (Ofgem), জুলাই মাস থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদ্যুতের নতুন মূল্য নির্ধারণ করবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময় একজন সাধারণ গ্রাহকের বিদ্যুতের বিল বছরে ১,৭২০ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৪২ হাজার টাকা) পর্যন্ত কমতে পারে।

বর্তমানে এই খরচ ১,৮৪৯ পাউন্ড (প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা)। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সামান্য হ্রাস রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগের তুলনায় এখনো প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি।

জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে ব্রিটেনের শিল্পখাতেও খারাপ প্রভাব পড়েছে। সরকারি তথ্য বলছে, ২০২১ সাল থেকে দেশটির শিল্প উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে এবং বর্তমানে তা ১৯৯০ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।

অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স (ওএনএস)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের চরম অবস্থায় কোম্পানি ও প্রস্তুতকারকদের জন্য বিদ্যুতের গড় মূল্য ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল।

এমনকি, ২০২৪ সালের শেষ দিকেও এই খরচ ২০২১ সালের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি ছিল। গ্যাসের দামও শিল্পখাতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

সংকটের সময় গ্যাসের দাম ১৮৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের অনেক পরিবার তাদের বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে সমস্যা অনুভব করছে। গত মাসে, রেকর্ড সংখ্যক পরিবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারণে তাদের বিল পরিশোধ করতে পারেনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানির দাম কমা-বাড়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই মুহূর্তে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই।

জ্বালানি ও জলবায়ু বিষয়ক বিশ্লেষক জেস রেলস্টন মনে করেন, বিল কমার এই পূর্বাভাস সাম্প্রতিক দাম বৃদ্ধির তুলনায় সামান্য।

জ্বালানি তেলের দামের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা। আমাদের অর্থনীতিতে এর প্রভাব বিবেচনা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।

এক্ষেত্রে, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমানো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *