ইংল্যান্ড নারী ফুটবল দল আবারও তাদের বোনাস নিয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) সঙ্গে এক জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে। আসন্ন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের আগে দলটির খেলোয়াড়েরা এখনো পর্যন্ত তাদের জন্য প্রস্তাবিত শর্তে রাজি হননি।
খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সদস্য, যেমন অধিনায়ক লিয়া উইলিয়ামসন, চেলসি ক্লাবের লুসি ব্রোঞ্জ এবং মিলি ব্রাইট। তাদের সঙ্গে রয়েছে পেশাদার ফুটবলারদের সংগঠনও।
দুই বছর আগে, ফিফা ব্যক্তিগত খেলোয়াড়দের ফি চালু করার পর বোনাস নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছিল, যা বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল। সেসময় এফএ পারফরম্যান্স-ভিত্তিক অর্থ দিতে প্রথমে রাজি হয়নি।
খবর অনুযায়ী, খেলোয়াড়েরা হতাশ হয়েছেন কারণ তাঁদের প্রস্তাবিত বোনাসের পরিমাণ অন্য শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক দলগুলোর চেয়ে কম। উদাহরণস্বরূপ, স্পেন নারী ফুটবল দল বিশ্বকাপ জেতার জন্য জনপ্রতি প্রায় ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার (২৫০,০০০ পাউন্ড) বোনাস পেয়েছিল এবং তারা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ইতিমধ্যে একটি লাভজনক চুক্তি চূড়ান্ত করেছে।
২০২২ সালের ইউরোর শিরোপা জেতার পর খেলোয়াড়েরা জনপ্রতি প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকার (৫৫,০০০ পাউন্ড) বোনাস পেয়েছিলেন। এবার তাঁরা এই অঙ্ক বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন, কারণ উয়েফা (UEFA) টুর্নামেন্টের জন্য প্রাইজমানি দ্বিগুণ করে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় (৩৪ মিলিয়ন পাউন্ড) উন্নীত করেছে।
বিজয়ী দলের ফেডারেশন উয়েফা থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা (৪.৩ মিলিয়ন পাউন্ড) পাবে এবং এর অন্তত ৩০ শতাংশ খেলোয়াড়দের মধ্যে বিতরণ করার নিয়ম রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে, খেলোয়াড়েরা চান তাঁদের প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করতে, যা নারী ফুটবলের প্রসারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে, তবে সময় লাগবে।
এফএ পাঁচ বছর আগে পুরুষ ও নারী উভয় দলের খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি সমান করে দিয়েছে, যেখানে প্রতিটি ম্যাচে প্রায় ২,৭০০ টাকা (২০ পাউন্ড) করে দেওয়া হয়। কিন্তু বোনাসের ক্ষেত্রে এখনো অনেক পার্থক্য রয়েছে, কারণ পুরুষ ও নারী টুর্নামেন্টের প্রাইজমানির পরিমাণ ভিন্ন।
আগামী মাসের শুরুতে ইংল্যান্ডের দল বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে দুটি নেশনস লিগ ম্যাচ খেলবে। এরপর তারা স্পেন ও পর্তুগালের সঙ্গে আরও দুটি ম্যাচ খেলবে।
আগামী ৫ জুলাই ফ্রান্সের বিরুদ্ধে কঠিন একটি ম্যাচ দিয়ে তারা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করবে।
খেলোয়াড়েরা চান, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে, অর্থাৎ মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রস্তুতি শিবিরের আগেই যেন বোনাস সংক্রান্ত বিষয়টির সমাধান হয়ে যায়।
এফএ এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান