আমার ছেলে, যে কিনা ইংল্যান্ডে বড় হয়েছে, তার শিকড় আইরিশ—আমার আর আমার স্ত্রীর সূত্রে। আমাদের পরিবারে, বিশেষ করে খেলাধুলার সময়ে, এই দুই পরিচয় নিয়ে প্রায়ই এক মজার দ্বন্দ্ব দেখা যায়।
ছেলে যখন তার বন্ধুদের সাথে থাকে, তখন যেন সে পুরোদস্তুর একজন ইংরেজ। স্কুলের বন্ধুদের কাছে সে তার আইরিশ পরিচয় তুলে ধরে, যেন এটা তার বহুজাতিক বন্ধুদের কাছে একটু ভিন্নতা যোগ করে। কিন্তু খেলাধুলার মাঠে, বিশেষ করে যখন আয়ারল্যান্ড অথবা ইংল্যান্ডের খেলা হয়, তখন সে দ্রুত তার দল পরিবর্তন করে।
গত মাসে, যখন একটি রাগবি খেলার পর সে হতাশ হয়ে পরেছিল, আমরা তাকে বুঝিয়েছিলাম, ‘তুমি তো দুই দিকেরই—বন্ধুদের মতো তুমি ইংরেজ, আবার আমাদের মতো আইরিশও বটে।’ সে কিছুক্ষণ ভেবে বলল, ‘আসলে বাবা, তুমি তো নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড থেকে এসেছ, আয়ারল্যান্ড থেকে নও।’
কথাটা সত্যি, আমার জন্ম নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে। আমার স্ত্রী আয়ারল্যান্ডের নাগরিক। এই পরিচয়গুলো নিয়ে মাঝে মাঝে আমাদের ছেলের মনে দ্বিধা তৈরি হয়।
ছোট্ট শিশুদের কাছে অনেক কিছুই পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে বলা কঠিন। তাদের মন অনেক কিছুই সহজে গ্রহণ করতে চায় না। আমার ছেলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সে সবসময় সবকিছুতে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম চায়।
তাই, আমি মাঝে মাঝে মজা করে বলি, নর্দার্ন আইরিশরা নাকি কিছু কাজ করতে পারে না, অথবা তাদের কিছু করার নিয়ম নেই। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমি কোনো কাজ করতে চাই না, তখন আমি বলি, ‘আমি তো নর্দার্ন আইরিশ, তাই এটা আমার করার নিয়ম নেই।’
আমার ছেলে এতে প্রথমে কিছুটা বিরক্ত হলেও, পরে সে বিষয়টা উপভোগ করতে শুরু করে। আমার স্ত্রী, যিনি রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ডের মানুষ, এমনটা কখনও করেন না।
তিনি হয়তো মনে করেন, এটা কোনো কাজের কথা নয়। তবে, আমার ছেলে ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছে যে, মানুষের আসল পরিচয়টা তাদের নিজেদের মধ্যেই থাকে।
আশা করি, খুব শীঘ্রই সে আমাকেও তার মায়ের মতোই আইরিশ হিসেবে গ্রহণ করবে। দেখা যাক, ভবিষ্যতে কী হয়!
তথ্য সূত্র: The Guardian