মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ দূষণ বন্ধে ইপএ-এর বিতর্কিত সিদ্ধান্ত!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (EPA) একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। তারা শিল্প-কারখানাগুলোর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশের যে নিয়ম, সেটি বাতিল করার প্রস্তাব দিয়েছে।

এই প্রস্তাবনাটি বর্তমানে পরিবেশ বিষয়ক আলোচনাগুলোতে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের EPA-এর এই প্রস্তাবনার মূল কারণ হলো, তাদের মতে, এই তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়াটি বেশ সময়সাপেক্ষ এবং এর ফলে ব্যবসার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচ হয়।

EPA প্রশাসক, লি জেল্ডিন মনে করেন, এই নিয়ম বাতিলের ফলে আমেরিকান ব্যবসায়ীরা আগামী দশ বছরে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে।

তবে, সমালোচকরা বলছেন, তথ্য প্রকাশের এই নিয়মটি বাতিল করা হলে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে যেতে পারে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

এই প্রোগ্রামের অধীনে, পরিশোধনাগার, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, তেল কূপ এবং ল্যান্ডফিলসহ বৃহৎ শিল্প-কারখানাগুলোকে তাদের গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ জানাতে হতো।

মূলত, এই তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্য ছিল দূষণ সৃষ্টিকারী কারখানাগুলো চিহ্নিত করা এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তথ্য প্রকাশের ফলে কোম্পানিগুলো তাদের নির্গমনের জন্য জনসাধারণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হতো।

২০০৯ সাল থেকে এই প্রোগ্রাম চালু হওয়ার পর, মার্কিন শিল্পখাতে কার্বন নিঃসরণ ২০ শতাংশ কমেছে।

এর প্রধান কারণ ছিল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া।

তবে, এই নিয়ম বাতিল হলে নির্গমনের পরিমাণে বড় ধরনের উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কারণ, তখন কোম্পানিগুলোর ওপর জনসাধারণের তেমন কোনো চাপ থাকবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তথ্য গোপন করার এই পদক্ষেপ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সমস্যা তৈরি করবে।

কারণ, নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ, কেউই নির্গমন হ্রাসের সঠিক উপায় খুঁজে বের করতে পারবে না।

অন্যদিকে, EPA-এর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই নিয়ম কমানোর ফলে কোম্পানিগুলো পরিবেশ সুরক্ষার জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে।

বর্তমানে, এই প্রোগ্রামের আওতায় ৪৭টি ভিন্ন উৎস থেকে নির্গমন হিসাব করা হয় এবং প্রায় ৮ হাজারের বেশি কারখানা ও সরবরাহকারীকে তাদের গ্রিনহাউস গ্যাসের হিসাব দিতে হয়।

EPA জানাচ্ছে, তারা মনে করে, এই তথ্য সংগ্রহ করার কোনো প্রয়োজন নেই এবং এর মাধ্যমে তাদের আইনগত দায়িত্ব পালনেও কোনো সুবিধা হয় না।

এই প্রস্তাবনার উপর জনমত যাচাইয়ের জন্য আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফেডারেল রেজিস্টারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

এরপর ছয় সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই বিষয়ে সাধারণ মানুষ তাদের মতামত জানাতে পারবে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *