যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এরদোগান-শেহবাজ সাক্ষাৎ: তুরস্কের চাঞ্চল্যকর বার্তা!

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সাথে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বাণিজ্যের নতুন দিগন্তের সূচনা?

সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, ও পরিবহন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক বেশ উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

বৈঠকে এরদোগান, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুরস্ক ও পাকিস্তানের মধ্যে শিক্ষা, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার ওপর গুরুত্ব দেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানান, উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।

আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, এই বৈঠকের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বিশেষ করে, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যখন অবনতির দিকে, তখন তুরস্কের এই উদ্যোগকে অনেকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন। এর আগে, ভারতের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, সাম্প্রতিক কাশ্মীর সংঘাতের সময় তুরস্ক পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে। যদিও তুরস্ক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর আগে, ফেব্রুয়ারি মাসে এরদোগান পাকিস্তান সফর করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য ২৪টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

তবে, তুরস্কের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সম্প্রতি বলেছেন, “পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে।” তিনি আরও জানান, তুরস্কের উচিত পাকিস্তানকে সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করতে জোরালোভাবে চাপ দেওয়া এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে উৎসাহিত করা।

অন্যদিকে, ভারতের কিছু ব্যবসায়ী সংগঠন ও অনলাইন ফ্যাশন রিটেইলাররা তুরস্কের পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে তুরস্ক থেকে ভারতে রপ্তানি হওয়া বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব পড়তে পারে। যদিও ভারতের বাজারে তুরস্কের প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলো হলো খনিজ জ্বালানি ও মূল্যবান ধাতু।

আঞ্চলিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তুরস্ক ও পাকিস্তানের মধ্যেকার এই ঘনিষ্ঠতা এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই বৈঠকের ফলশ্রুতিতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয় এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এর প্রভাব কী হয়।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *