শিরোনাম: অভিনেতা এরিক ডেন: এএলএস-এর সঙ্গে লড়াই, মেয়ের সাহসিকতায় জীবনরক্ষা
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা এরিক ডেন সম্প্রতি অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস (এএলএস) নামক এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এই খবরে তাঁর অগণিত অনুরাগী যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনই মর্মাহত হয়েছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর জীবনের এক কঠিন মুহূর্তের কথা জানিয়েছেন, যখন তিনি বুঝতে পারেন, এই রোগের কারণে তিনি আগের মতো সাঁতার কাটতে পারছেন না।
সাক্ষাৎকারে এরিক ডেন জানান, একসময় তিনি ছিলেন দক্ষ সাঁতারু এবং পোলো খেলোয়াড়। কিন্তু এএলএস-এর কারণে তাঁর শারীরিক ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।
সমুদ্রের জলে নামার পর যখন তিনি সাঁতার কেটে তীরে ফিরতে পারছিলেন না, তখন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেই সময় তাঁর ১৩ বছর বয়সী মেয়ে বিলি এগিয়ে আসে এবং বাবার জীবন বাঁচায়।
ডায়ান সোয়ারের সঙ্গে আলাপকালে এরিক ডেন বলেন, “আমি যখন সমুদ্রে ঝাঁপ দিলাম, তখনই বুঝতে পারলাম, আমার পক্ষে আর আগের মতো সাঁতার কাটা সম্ভব নয়। শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি পাচ্ছিলাম না, যা আমাকে নৌকার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সেই মুহূর্তে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।”
এসময় তাঁর মেয়ে বিলি দ্রুত এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে। সাক্ষাৎকারে ডেন আরও বলেন, “আমি তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। বিলিকে আমি দ্রুত তার বন্ধুর সঙ্গে আবারও পানিতে নামতে বলি এবং তাদের স্নরকেলিং চালিয়ে যেতে বলি।”
এএলএস, যা সাধারণত ‘লু গেরিগ’স ডিজিজ’ নামে পরিচিত, একটি বিরল স্নায়ু-সংক্রান্ত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মাংসপেশি ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে এবং একসময় কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
এর ফলে কথা বলা, খাবার খাওয়া, হাঁটাচলা এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিও কঠিন হয়ে পড়ে। বর্তমানে এই রোগের কোনো নিরাময় নেই।
সাধারণত রোগ নির্ণয়ের পর একজন রোগী ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচেন।
এরিক ডেন তাঁর স্ত্রী রেবেকা গেইহার্টের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলেন, যদিও পরে তাঁরা সেই আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।
তাঁরা দু’জন তাঁদের দুই মেয়ে, ১৫ বছর বয়সী বিলি এবং ১৩ বছর বয়সী জর্জিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। রেবেকা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও ভালো বন্ধু এবং সন্তানের ভালো ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করছেন।
এরিক ডেনের এই কঠিন সময়ে তাঁর পরিবার সবসময় তাঁর পাশে আছে। অভিনেতার এই লড়াইয়ে তাঁর ভক্তরা সবাই তাঁর সুস্থতা কামনা করছেন এবং এই রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল