যুক্তরাজ্যের একটি জাদুঘরে শিল্পী এরিক গিলের কাজ নিয়ে একটি বিশেষ প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে, যা এরই মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই প্রদর্শনীর বিশেষত্ব হলো, এর আয়োজনে সরাসরি যুক্ত আছেন যৌন নির্যাতনের শিকার কয়েকজন নারী।
যারা এই প্রদর্শনীটির বিষয়বস্তু নির্বাচন থেকে শুরু করে এর উপস্থাপনা— সবকিছুতেই তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
এরিক গিল ছিলেন একজন খ্যাতিমান শিল্পী। তার শিল্পকর্ম এখনো অনেক সমাদৃত। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি তার দুই মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিলেন।
এই ঘটনার পর, গিলের শিল্পকর্মের মূল্যায়ন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অনেক গ্যালারি তার কাজ প্রদর্শন করা বন্ধ করে দেয়, আবার কোনো কোনো স্থানে তার কাজের সঙ্গে নির্যাতনের ঘটনাগুলো উল্লেখ করা হয়।
পশ্চিম সাসেক্সের ডিচলিং মিউজিয়াম অফ আর্ট + ক্রাফট-এ হতে যাওয়া এই প্রদর্শনীতে গিলের শিল্পকর্মের সঙ্গে তার করা এই ঘৃণ্য কাজের বিষয়টিও তুলে ধরা হবে।
প্রদর্শনীর অন্যতম আকর্ষণ হতে যাচ্ছে ‘অ্যানান্সিয়েশন’ শিরোনামের একটি চিত্রকর্ম। নির্যাতনের শিকার নারীদের মতে, এই ছবিতে একজন ভীতু মেয়ের প্রতিকৃতি রয়েছে, যে তার নিজের ঘরেও নিরাপদ নয়।
তাদের মতে, এই চিত্রকর্ম ক্ষমতা প্রদর্শনের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।
এই প্রদর্শনীর সঙ্গে যুক্ত ভিবিয়েন অ্যালমন্ড বলেন, “আমরা তার কাজগুলো দেখাচ্ছি, কারণ আমরা এই মানুষটির গল্প বলতে চাই। তার শিল্পকর্ম যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ তার কৃতকর্মের ইতিহাসও।
যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের যন্ত্রণা কখনো ভোলা যায় না।
প্রদর্শনীতে গিলের আঁকা তার মেয়েদের ছবিও রাখা হবে, যার মধ্যে ১৬ বছর বয়সে আঁকা একটি নগ্ন ছবিও রয়েছে। এই বিষয়ে মিউজিয়ামের পরিচালক স্টেফ ফুলার বলেন, “আমরা দর্শকদের সংবেদনশীলতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
এই প্রদর্শনীটি ‘ইট টেকস এ ভিলেজ’ (It Takes a Village) শিরোনামে আয়োজিত হবে এবং জুলাই মাসের শুরুতে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
নির্যাতনের শিকার নারীদের এই উদ্যোগে একদিকে যেমন শিল্পকর্মের প্রতি সম্মান জানানো হচ্ছে, তেমনই তুলে ধরা হচ্ছে একজন ক্ষমতাধর ব্যক্তির অন্ধকার দিক।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান