অস্ট্রেলিয়ার একটি আদালতে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি চলছে, যেখানে এরিন প্যাটারসন নামের এক নারীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি গরুর মাংসের ওয়েলিংটন পরিবেশন করে তার শ্বশুর-শাশুড়ি সহ আরও কয়েকজনকে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করেছেন।
এই খাবারে মারাত্মক “ডেথ ক্যাপ” মাশরুম ব্যবহার করা হয়েছিল, যা খাওয়ার কয়েকদিন পরেই ভুক্তভোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মামলার শুনানিতে ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এরিন প্যাটারসন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসকের পরামর্শ উপেক্ষা করে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। ডাক্তার ক্রিস্টোফার ওয়েবস্টার আদালতে জানান, ঘটনার দুই দিন পর তিনি যখন এরিনকে জানান যে তিনি সম্ভবত বিষাক্ত মাশরুমের শিকার হয়েছেন, তখন তিনি অবাক হয়েছিলেন যে এর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই এরিন হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।
ডাক্তার ওয়েবস্টার আরও জানান, তিনি এরিনকে হাসপাতালে থাকার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, কারণ তার চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এরিন তাতে রাজি হননি।
আদালতে শুনানিতে ডাক্তার ওয়েবস্টার আরও জানান, এরিনের ব্যবহৃত মাশরুমগুলো “উলওয়ার্থস” নামক একটি জনপ্রিয় অস্ট্রেলিয়ান সুপারমার্কেট থেকে কেনা হয়েছিল। তিনি পুলিশকে খবর দেন এবং এরিনকে হাসপাতালে ফেরানোর জন্য কয়েকবার ফোন করেন।
পরে, পুলিশ এরিনের বাড়িতে যায় এবং খাবারের অবশিষ্ট অংশ খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও জেরা করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা আদালতে তাদের সাক্ষ্য দেন। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে এরিনের সম্পর্ক ভালো ছিল, এমনকি বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় ছিল বলে জানা যায়।
আদালতের শুনানিতে জানা যায়, এরিন তার শ্বশুর-শাশুড়ি এবং অন্যান্য আত্মীয়দের প্রায় ৪ লক্ষ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি টাকা) ঋণ দিয়েছিলেন।
শুনানিতে আরও জানা যায়, এরিন প্যাটারসন বেশ কয়েকবার মিথ্যা বলেছেন। তিনি তার ক্যান্সার হওয়ার গল্পও তৈরি করেছিলেন, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
আদালত আরও জানতে পেরেছে যে, ঘটনার দিন এরিন তার সন্তানদের হাসপাতালে নিতে চাননি।
মামলার শুনানিতে ঘটনার আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এই মামলার রায় কি হয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান