দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনে অনেক সময় সম্পর্কের গভীরতা কমে আসে। একসঙ্গে পথ চলতে চলতে ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গিতেও পরিবর্তন আসে, যা স্বাভাবিক।
কিন্তু এই পরিবর্তন যদি দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে, তাহলে তা চিন্তার কারণ। সম্প্রতি, বিবাহিত জীবনকে আরও সুন্দর করে তোলার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পাওয়া গেছে।
অটো ও মেভ নামের এক দম্পতির প্রায় সাতাশ বছরের দাম্পত্য জীবন।
একটা সময়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক কমে গিয়েছিল, যা তাদের দু’জনের জন্যই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তারা বুঝতে পারছিলেন, সম্পর্কের উষ্ণতা যেন ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
তারা দুজনেই অনুভব করেছিলেন, ভালোবাসার গভীরতা ধরে রাখতে হলে, নিজেদের মধ্যে খোলাখুলি কথা বলাটা জরুরি।
অটো জানান, “আগে আমরা নিজেদের ভালো লাগা, মন্দ লাগাগুলো নিয়ে সেভাবে কথা বলতাম না।
কিন্তু যখন আমরা বুঝতে পারলাম, কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন, তখন আমরা একে অপরের সঙ্গে আমাদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করি।”
বিষয়টি সহজ ছিল না।
সমাজের প্রচলিত ধ্যান-ধারণা এবং নিজেদের অভ্যাসের কারণে, অনেক সময় কথা বলতে দ্বিধা হতো।
তবে তারা চেষ্টা চালিয়ে যান।
তারা দম্পতি বিষয়ক কাউন্সেলরের পরামর্শ নেন এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু বিষয় মেনে চলতে শুরু করেন।
মেভের মতে, “কাউন্সেলিং আমাদের অনেক সাহায্য করেছে।
আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, আমাদের সম্পর্কের গভীরতা কমে যাওয়ার কারণগুলো কী কী।
আমাদের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছিলাম।
এরপর আমরা একে অপরের প্রতি আরও যত্নশীল হয়ে উঠি।”
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, তারা একে অপরের প্রতি মনোযোগ দিতে শুরু করেন।
নিজেদের ভালো লাগা, মন্দ লাগাগুলো নিয়ে আলোচনা করা, একসঙ্গে সময় কাটানো এবং নিজেদের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করার মতো বিষয়গুলো তাদের সম্পর্কের উন্নতিতে সাহায্য করে।
তারা দু’জনেই তাদের ব্যক্তিগত ভালো লাগা, ভালোবাসার কথা লিখে একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করতে শুরু করেন।
এর ফলস্বরূপ, তাদের সম্পর্কের উন্নতি ঘটে।
তারা আবার আগের মতো কাছাকাছি আসতে শুরু করেন।
তাদের মধ্যে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ আরও গভীর হয়।
এই দম্পতির অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার গভীরতা বজায় রাখতে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও খোলামেলা আলোচনা খুবই জরুরি।
নিজেদের মধ্যেকার সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বললে, তা সম্পর্কের উন্নতিতে সাহায্য করে এবং ভালোবাসার বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।
প্রয়োজনে, অভিজ্ঞ পরামর্শকের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান