আলোচনা: কিভাবে এসেক্সের সমাজকর্মীরা উন্নয়নের সুযোগ পাচ্ছে?

সামাজিক কর্মীদের পেশাগত উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের একটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্ত।

বর্তমান বিশ্বে, উন্নত দেশগুলোতে সামাজিক কর্মীদের (সমাজকর্মী – যারা সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষ ও পরিবারকে সহায়তা করেন) পেশাগত উন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। এর কারণ হলো, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এবং সমাজের দুর্বল মানুষদের পাশে দাঁড়াতে প্রশিক্ষিত ও যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীর প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।

সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের এসেক্স কাউন্টি কাউন্সিল কিভাবে তাদের সামাজিক কর্মীদের ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা করছে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হলো।

কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ কর্মীদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করেছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, কর্মীদের কাজের প্রতি আগ্রহ বজায় রাখা এবং তাদের কর্মজীবনে উন্নতির সুযোগ তৈরি করা।

এসেক্স সোশ্যাল কেয়ার একাডেমি ২০১২ সাল থেকে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। এখানে প্রাপ্তবয়স্কদের মানসিক স্বাস্থ্য, ইন্টারনেটের নিরাপত্তা, এবং অভিবাসী শিশুদের মানসিক আঘাত বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

কাউন্সিলের কর্মপরিবেশ কর্মীদের জন্য খুবই সহায়ক। এখানে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে, যা কর্মীদের অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে।

কর্মীরা তাদের দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে কাজ করার সুযোগ পান। উদাহরণস্বরূপ, কাউন্সিলের একজন পরিচালক এসেক্সে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং তিনি বিভিন্ন ধরনের দশটি পদে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।

একাডেমির প্রধান পল ম্যাকগি জানান, কর্মীদের উন্নয়নের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে। কর্মীদের কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হয়।

কর্মীদের কাজের মূল্যায়ন করা হয় এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

একাডেমিতে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কর্মীদের জন্য তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থা রয়েছে। কর্মীদের কাজের চাপ কমানোর জন্য কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

কর্মীদের জন্য নমনীয় কাজের সময় এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই সকল পদক্ষেপের ফলে কর্মীদের মধ্যে কাজের আগ্রহ বেড়েছে এবং তারা ভালো ফল করতে উৎসাহিত হয়েছে।

এসেক্স কাউন্টির শিশু পরিষেবা বিভাগ তাদের ভালো কাজের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ ‘অফস্টড’ (Ofsted) রিপোর্টে টানা দ্বিতীয়বার ‘ outstanding’ স্থান অর্জন করেছে। এই সাফল্যের পেছনে কর্মীদের একাগ্রতা, কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ এবং কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

সামাজিক কর্মীদের পেশাগত উন্নয়নের এই দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের জন্যও অনুকরণীয় হতে পারে। আমাদের দেশেও সামাজিক কর্মীদের প্রশিক্ষণ, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ এবং উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা গেলে, সমাজের দুর্বল জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা সম্ভব।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *