আসন্ন মে মাসের শুরুতে আকাশে দেখা যাবে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মেলা, উল্কাপাত! প্রতি বছর এই সময়ে, পৃথিবীর আকাশ এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সাক্ষী থাকে – ইটা অ্যাকোরিড উল্কা বৃষ্টি (Eta Aquariid meteor shower)। নভোচারী এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রেমীদের জন্য, এই ঘটনাটি একটি বিশেষ আকর্ষণ।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক এই উল্কা বৃষ্টি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
ইটা অ্যাকোরিড উল্কা বৃষ্টি আসলে কী?
এই উল্কা বৃষ্টি তৈরি হয় হ্যালির ধূমকেতুর (Halley’s Comet) ফেলে যাওয়া ধূলিকণা থেকে। যখন আমাদের পৃথিবী এই ধূলিকণার এলাকা দিয়ে অতিক্রম করে, তখন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সাথে সাথেই এই কণাগুলো জ্বলে ওঠে, ফলে আলোর ঝলকানি সৃষ্টি হয়।
নাসা (NASA) এর মতে, এই উল্কাগুলো ঘণ্টায় প্রায় ৬৪.৪ কিলোমিটার (৪০.৭ মাইল) বেগে ছুটে আসে।
কখন দেখা যাবে এই উল্কা বৃষ্টি?
সাধারণত, ইটা অ্যাকোরিড উল্কা বৃষ্টি সক্রিয় থাকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তবে, ২০২৩ সালের ৫ ও ৬ মে তারিখে এর সর্বোচ্চ প্রভাব দেখা যাবে।
অর্থাৎ, এই সময়ে রাতের আকাশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক উল্কা দেখা যেতে পারে।
কোথায় দেখবেন?
এই উল্কা বৃষ্টি উত্তর এবং দক্ষিণ উভয় গোলার্ধ থেকে দেখা যায়। তবে, দক্ষিণ গোলার্ধে বসবাসকারীরা এটি ভালোভাবে দেখতে পান।
কারণ, উল্কা বৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু (radiant) অ্যাকোরিয়াস নক্ষত্রমণ্ডলীর কাছাকাছি থাকে। এই সময়ে ভোরের আকাশে, বিশেষ করে সূর্যোদয়ের ঠিক আগে, এটি দেখার সেরা সময়।
কীভাবে দেখবেন?
উল্কা বৃষ্টি দেখার জন্য আপনাকে খুব বেশি কিছু করতে হবে না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শহর থেকে দূরে, আলো কম এমন কোনো জায়গায় যাওয়া।
মেঘমুক্ত একটি পরিষ্কার আকাশ থাকলে, খালি চোখেই এই দৃশ্য উপভোগ করা সম্ভব। রাতের বেলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকুন, আর অপেক্ষা করুন সেই মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের।
বাংলাদেশের আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে, এপ্রিল-মে মাসে এখানে মেঘ এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। তাই, পরিষ্কার আকাশ পাওয়ার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হতে পারে।
শহর অঞ্চলের আলো দূষণের কারণে, ঢাকার আশেপাশে এই দৃশ্য দেখা কঠিন হতে পারে। সেক্ষেত্রে, ঢাকার বাইরে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে গেলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
এই উল্কা বৃষ্টির পরে, জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেখা যাবে সাউদার্ন ডেল্টা অ্যাকোয়ারিড উল্কা বৃষ্টি।
আকাশের এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
তথ্য সূত্র: পিপল