ইথিওপিয়া তাদের বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, গ্র্যান্ড রেনেসাঁ বাঁধের উদ্বোধন করেছে, যা আফ্রিকার ইতিহাসে বৃহত্তম। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, বিদ্যুতের অভাব দূর করা এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বাঁধের উদ্বোধন করা হয়, যেখানে প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত নীল নদের একটি উপনদীর ওপর অবস্থিত এই বাঁধটি ৫,০০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে, যা ইথিওপিয়ার বর্তমান বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতাকে দ্বিগুণ করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বলেন, এই বাঁধ আফ্রিকানদের সক্ষমতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট সালভা কির এবং কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো’র মত নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট সালভা কির জানান, তারা খুব শীঘ্রই ইথিওপিয়ার কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বলেন, তার দেশও এই বাঁধ থেকে বিদ্যুৎ কেনার ব্যাপারে আগ্রহী। তিনি একে একটি “প্যান-আফ্রিকান” উদ্যোগ হিসেবেও বর্ণনা করেন।
কেনিয়া বর্তমানে ইথিওপিয়া থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে এবং তারা তাদের বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে চাইছে।
তবে, এই বাঁধ নির্মাণ নিয়ে প্রতিবেশী দেশ, বিশেষ করে মিশরের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। মিশর আশঙ্কা করছে, বাঁধের কারণে নীল নদের পানির প্রবাহ কমে যাবে, যা তাদের কৃষি এবং একশ’ মিলিয়নের বেশি মানুষের জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব ফেলবে। মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তামিম খাল্লাফ এই বাঁধকে “অস্তিত্বের জন্য হুমকি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
মিশরের উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায় ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ প্রতিবেশী দেশগুলোকে আশ্বস্ত করে বলেন, তারা কারো ক্ষতি করবে না এবং সবাই মিলে একসঙ্গে উন্নতি করবে। তিনি আরও বলেন, “আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, ইথিওপিয়া কখনোই আপনাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।
বিদ্যুৎ এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা এবং এই ধরনের প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করলে, ইথিওপিয়ার এই বৃহৎ প্রকল্প উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হতে পারে। এটি তাদের বিদ্যুৎ নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে সহায়ক হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।