ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল ও অ্যাপলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল বাজারের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ এনেছে। এই ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর পক্ষে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে।
ইউরোপীয় কমিশনের মতে, গুগল তাদের সার্চ ইঞ্জিনে এমনভাবে ফলাফল দেখায়, যা তাদের নিজস্ব পরিষেবাগুলোকে অন্যদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। এছাড়াও, গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য এমন কিছু শর্ত রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের অন্য কোনো প্ল্যাটফর্মে ভালো অফার খুঁজে বের করতে বাধা দেয়।
অন্যদিকে, অ্যাপলকে তাদের অপারেটিং সিস্টেম অন্যান্য কোম্পানির ডিভাইসের জন্য উন্মুক্ত করতে বলা হয়েছে।
ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (DMA) নামের এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা। এই আইন ভাঙলে কোম্পানিগুলোকে তাদের বিশ্বব্যাপী আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।
যদি তারা বারবার একই ভুল করে, তবে জরিমানার পরিমাণ ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি অ্যাপলের ২০২৩ সালের আয় হিসাব করা হয়, তবে তাদের প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার জরিমানা হতে পারে।
(১ ডলার = ১১৮ টাকা ধরে হিসাব করলে, এই জরিমানার পরিমাণ ৯,৫৫৮ বিলিয়ন টাকার বেশি)।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অ্যাপলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং ইউরোপের ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সুবিধাগুলো বিনামূল্যে অন্য কোম্পানিগুলোর কাছে দিতে বাধ্য করবে।
অন্যদিকে, গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই পরিবর্তনের ফলে ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে সমস্যা অনুভব করতে পারে।
ইইউ-এর এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি খাতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি ডিজিটাল বিশ্বে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এর তীব্র বিরোধিতা আসতে পারে, কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশে এখনই হয়তো দেখা যাবে না।
তবে, ডিজিটাল পরিষেবা এবং অনলাইন বাজারের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই ঘটনা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ তৈরি করতে পারে। কারণ, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর একচেটিয়া আধিপত্য এবং ডেটা সুরক্ষার মতো বিষয়গুলো বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের কারণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান