ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্প্রতি জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকের বিরুদ্ধে তাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। ইইউ কর্তৃপক্ষের মতে, টিকটকের বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনার ডেটাবেজে কিছু দুর্বলতা রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট (Digital Services Act বা DSA) নামক একটি আইনের অধীনে, ইইউ অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ব্যবহারকারীদের সুরক্ষায় বিভিন্ন নিয়মকানুন তৈরি করতে বাধ্য করে। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো— ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচন সংক্রান্ত ভুয়া তথ্য বা ভুল খবর (disinformation) ছড়ানো প্রতিরোধ করা।
এই লক্ষ্যে, প্ল্যাটফর্মগুলোকে তাদের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হয়। যেমন, কোন বিজ্ঞাপনটি কেন দেখানো হচ্ছে, তার পেছনের খরচ কে দিয়েছে— ইত্যাদি তথ্য ব্যবহারকারীদের জানাতে হয়।
ইইউ কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টিকটক তাদের বিজ্ঞাপন ডেটাবেজে বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু, কাদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপনটি দেখানো হচ্ছে এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, গবেষকদের পক্ষে ক্ষতিকর বিজ্ঞাপন, ভুয়া খবর এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে এমন প্রচারণা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
ইইউ কমিশনের নির্বাহী ভাইস- প্রেসিডেন্ট হেনা ভাইরকুনেন (Henna Virkkunen) এই প্রসঙ্গে বলেছেন, অনলাইন বিজ্ঞাপনে স্বচ্ছতা রক্ষা করা খুবই জরুরি। জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিজ্ঞাপনদাতাদের পরিচয় এবং দর্শক নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা অত্যাবশ্যক।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা গণতান্ত্রিক নির্বাচনের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কিংবা ব্যবহারকারীদের প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন থেকে বাঁচাতে চাই— নাগরিকদের এটা জানার অধিকার আছে যে, তারা যে বার্তা দেখছেন, তার পেছনে কারা রয়েছে।
টিকটকের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগের বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যদি টিকটক তাদের ভুলগুলো সংশোধন করতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের বার্ষিক বৈশ্বিক আয়ের ৬ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
বর্তমানে, টিকটকের বিরুদ্ধে আরও একটি তদন্ত চলছে, যা রুমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত। অভিযোগ উঠেছে, টিকটক নির্বাচনে হস্তক্ষেপের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত বছর রুমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এবং রাশিয়ার হস্তক্ষেপের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস