যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ: নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ালো ইউরোপীয় ইউনিয়ন
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ময়দানে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তাদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা জারির সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছে। মূলত, আগামী আগস্ট মাসের শুরুতে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের কথা রয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হলো, দু’পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য বিষয়ক একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য আরও বেশি সময় নেওয়া।
সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি একটি বার্তা পাঠিয়েছে, যেখানে ১লা আগস্টের মধ্যে কোনো বাণিজ্য চুক্তি না হলে, ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে, ইইউ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে পৌঁছাতে চায়। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন der Leyen এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “আমরা সবসময়ই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। সেই লক্ষ্যে, আমরা এখন ১লা আগস্ট পর্যন্ত সময় নিচ্ছি।”
এর আগে, গত এপ্রিল মাসে ইইউ জানিয়েছিল, তারা প্রায় ২১ বিলিয়ন ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ২ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকার বেশি) মার্কিন পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করছে, যা ১৪ই জুলাই পর্যন্ত কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, কারণ যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করেছিল।
শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র যদি নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপ করে, সেই পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার জন্য ইইউ আরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভন der Leyen জানিয়েছেন, “আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের কিছু সম্ভাব্য পদক্ষেপের তালিকা তৈরি করেছি।” এছাড়া, ইইউ তাদের বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত করতে চাইছে।
এর অংশ হিসেবে, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে একটি বড় ধরনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেকার বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৯৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকার সমান।
ইইউ মনে করে, বিশ্বের খুব কম দেশই বাণিজ্য ক্ষেত্রে তাদের মতো উদার এবং স্বচ্ছ নীতি অনুসরণ করে।
তাই তারা আলোচনার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু সমাধানে আসতে চায়। এই বাণিজ্য বিরোধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন