ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আসন্ন ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ব্রাসেলসে ইইউ নেতারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ইউরোপের নিরাপত্তা স্বার্থকে গুরুত্ব দেন।
খবর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার আলাস্কায় এই শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইইউ নেতারা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প সম্ভবত পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে রাজি হতে পারেন। এমনটা হলে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ইউক্রেন যুদ্ধের চতুর্থ বছরে এসে, পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করেছে। বিশেষ করে, ডনেৎস্ক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোкровস্কের কাছাকাছি তারা দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। পোкровস্ক হাতছাড়া হলে রাশিয়ার জন্য এটি হবে একটি বড় বিজয়। একইসঙ্গে ইউক্রেনের সামরিক সরবরাহ ব্যবস্থা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এরই মধ্যে ইউরোপীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তাঁরা যেন রাশিয়ার উপর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়ান। জেলেনস্কি মনে করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যাবে এবং ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখল করে রাখবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই চাপ অব্যাহত রাখা উচিত।
এদিকে, ট্রাম্প সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়কেই কিছু ভূমি ছাড় দিতে হতে পারে। তাঁর এই মন্তব্যের জেরে অনেকেই উদ্বিগ্ন। কারণ, ট্রাম্পের এই ধরনের বক্তব্য পুতিনের প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ করে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রায়েডরিশ মের্জ বুধবার একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করেছেন, যেখানে এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের মতো কিছু নেতা রয়েছেন, যাঁরা ইইউ-এর নেওয়া পদক্ষেপের সঙ্গে একমত নন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দিয়েছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিবর্তনের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়ছে।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোট পরিবর্তন এবং ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের স্বার্থও প্রভাবিত হতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস