ক্রিস ইউব্যাঙ্ক জুনিয়র ও কনার বেন-এর লড়াই: বাবারাই যাদের পরিচয়। উত্তর লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ক্রিস ইউব্যাঙ্ক জুনিয়র সর্বসম্মতভাবে কনার বেনকে পরাজিত করেছেন।
খেলাটি ছিল শুধু একটি বক্সিং ম্যাচ নয়, বরং দুই কিংবদন্তি বক্সারের উত্তরসূরীদের মধ্যেকার লড়াই। এই ম্যাচের আকর্ষণ ছিল আকাশচুম্বী, কারণ এটি ছিল তাদের বিখ্যাত বাবারা—ক্রিস ইউব্যাঙ্ক সিনিয়র এবং নাইজেল বেন—এর ৩০ বছর আগের ঐতিহাসিক লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি।
বক্সিং জগতে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে, ইউব্যাঙ্ক ও বেন পরিবারের মধ্যেকার সম্পর্ক এক উল্লেখযোগ্য বিষয়। এই দুই পরিবারের লড়াইয়ের ইতিহাস বহু পুরনো এবং এই দুই পরিবারের ছেলেরা যখন রিংয়ে নামেন, তখন যেন পুরনো সেই স্মৃতিগুলোই ফিরে আসে।
ম্যাচ শুরুর আগে, অনেক দর্শকই যেন তাদের বাবার সেই পুরনো দিনের লড়াইয়ের স্মৃতি মনে করছিলেন। ম্যাচের শুরুতে কিছুটা দ্বিধা থাকলেও, ধীরে ধীরে তা জমে ওঠে।
দুই প্রতিপক্ষের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলাটি অন্যরকম রূপ নেয়। তবে, খেলার ফল নির্ধারণে বিচারকদের কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয়।
স্কোরকার্ডে দেখা যায়, তিনজন বিচারকই ১১৬-১১২ পয়েন্ট দিয়ে ইউব্যাঙ্ক জুনিয়রের পক্ষে রায় দিয়েছেন। খেলাটি শুধুমাত্র মাঠের লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না।
গ্যালারিতেও ছিল তারকার মেলা। বিশ্বখ্যাত শেফ গর্ডন রামসে থেকে শুরু করে অভিনেতা ইদ্রিস এলবা, এবং প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার—ডেক্লান রাইস ও মার্কাস রাশফোর্ড সহ আরও অনেকে এই ম্যাচ উপভোগ করতে এসেছিলেন।
এই উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, বক্সিং ম্যাচটি শুধু খেলাপ্রেমীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি সাধারণ মানুষের মাঝেও ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। ম্যাচের আগে কনার বেনের মাদক পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।
অনেকে এই ম্যাচটি নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু খেলার মাঠে দুই বক্সারের লড়াই ছিল অত্যন্ত সাহসিকতাপূর্ণ। ম্যাচ শেষে, কনার বেনের প্রচারক এডি হার্ন বলেন, “আমি খেলা শেষে তাদের আলাদা করতে পারিনি।
আমার মনে হয়েছিল কনার বেন জিতছে। কিন্তু শেষ দুই রাউন্ডে সে হেরে যায়… তবে, তাদের প্রতি আমার সম্মান অনেক বেশি।” বক্সিং একটি আকর্ষণীয় খেলা।
এখানে অনেক সময় অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। তবে, ইউব্যাঙ্ক জুনিয়র এবং বেন—দুজনেই তাদের বাবার মতোই লড়াকু মনোভাব দেখিয়েছেন, যা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান