যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভুল’ ভাঙতে, ইউরোপে আমেরিকান পণ্য বর্জনের হিড়িক!

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির প্রতিবাদে ইউরোপে মার্কিন পণ্য বর্জনের ডাক।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং অন্যান্য সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইউরোপের কিছু মানুষ এখন মার্কিন পণ্য বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে আমেরিকান জিনিসপত্রের পরিবর্তে ইউরোপীয় বা স্থানীয় পণ্য ব্যবহার করছেন।

এই আন্দোলনের মূল কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাণিজ্য যুদ্ধ এবং তাঁর বিভিন্ন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতি অসন্তুষ্টি।

আয়ারল্যান্ডের কিলকেনির বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সী ময়া ও’সুলিভান, যিনি ইতিহাস ও ইংরেজি পড়ান, তিনি জানান, এখন থেকে তিনি আর ফিলাডেলফিয়া ক্রিম চিজ কিনবেন না।

ওরিওস এবং অন্যান্য আমেরিকান পণ্যও তাঁর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। তাঁর বাথরুমের তাক থেকে বাদ পড়েছে ওরল-বি ও লিস্টেরিন, পানীয়ের তালিকা থেকেও সরানো হয়েছে জ্যাক ড্যানিয়েলস ও কোকা-কোলা।

এই বর্জন আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত জেমস ব্ল্যাকলেজ নামের একজন ব্যক্তি জানান, তিনি এখন হেলম্যানস-এর বদলে বাড়িতে মেয়োনিজ তৈরি করেন এবং মাঝে মাঝে ম্যাকডোনাল্ডস-এর কফি খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই তাঁর অনেক বন্ধু এই ধরনের আমেরিকান পণ্য বর্জন করা শুরু করেছেন।

এই প্রতিবাদকারীরা অনলাইনে তাঁদের ভাবনা বিনিময় করছেন এবং কীভাবে এই আন্দোলনে আরও বেশি মানুষকে যুক্ত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করছেন।

ডেনমার্কের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা স্যালিং গ্রুপ তাদের দোকানে ইউরোপে তৈরি পণ্যের লেবেল যুক্ত করেছে, যা গ্রাহকদের ইউরোপীয় পণ্য বেছে নিতে উৎসাহিত করছে।

সুইডেন ও ডেনমার্কে আমেরিকান পণ্য বর্জনের জন্য ফেসবুক গ্রুপ তৈরি হয়েছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ বিকল্প খুঁজছেন।

তবে, এই বর্জন আন্দোলনের অর্থনৈতিক প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়।

ইউরোপীয় নেতারাও ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছেন, যার কারণে আগের মতো ব্যাপক প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে না।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিবাদী দলের মুখপাত্র জোয়ে গার্ডনারের মতে, আগের বারের মতো এবার মানুষ ততটা ক্ষুব্ধ বা প্রতিবাদী নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বিক্ষোভকারীরা ভিন্ন পথ বেছে নিচ্ছেন।

যুক্তরাজ্যে টেসলা শোরুমের বাইরে প্রতিবাদ হয়েছে, যেখানে টেসলার মালিক ইলন মাস্কের প্রশাসনিক কার্যক্রমের বিরোধিতা করা হয়েছে।

তবে, এসব বিক্ষোভে আগের মতো লোক দেখা যায়নি।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ইউরোপে টেসলার বিক্রি কমেছে।

যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন মডেল বাজারে আসলে বিক্রি বাড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির প্রতিবাদে ইউরোপীয়দের এই পদক্ষেপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।

তাঁরা তাঁদের অর্থ খরচ করার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি তাঁদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে চাইছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *