ইউরোপ কি আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য নীতি পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে ইউরোপ। একদিকে যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, তেমনই শোনা যাচ্ছে ইউরোপ থেকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি কমানোর কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র।
এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশগুলো কতটা প্রস্তুত, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে, ইউরোপের নিরাপত্তা অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে, ইউরোপের দেশগুলোকে একরকম নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেরাই করতে বলা হয়েছে।
যদিও এখনো পর্যন্ত ইউরোপে প্রায় ৮০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে, যা শীতল যুদ্ধের সময়ের তুলনায় অনেক কম।
সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে ঝুঁকছে ইউরোপের দেশগুলো।
ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো দেশগুলো তাদের সামরিক খাতে অর্থ বিনিয়োগ করছে।
তবে এই বিনিয়োগের ফল পেতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপীয় দেশগুলোর সামরিক দুর্বলতাগুলো স্পষ্ট হয়েছে।
পোল্যান্ডকে এক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দেশটি দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে।
তবে এর কারণ শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের সুনজরে আসা নয়, বরং রাশিয়ার সঙ্গে তাদের ঐতিহাসিক সম্পর্কও এর কারণ।
পোল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে দেখে আসছে এবং ইউক্রেনকে সমর্থন জুগিয়ে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপে সেনা মোতায়েন রেখেছে।
এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এছাড়াও, এই সেনারা মিত্র দেশগুলোর সামরিক প্রশিক্ষণ এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করে।
বর্তমানে জার্মানি, ইতালি এবং পোল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
তুরস্ক, গ্রিস এবং ইতালির নৌ ও বিমান ঘাঁটিগুলো মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক মিশনে সহায়তা করে।
তবে, ইউরোপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধ ক্ষমতা হলো তাদের পারমাণবিক অস্ত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের ইঙ্গিত দিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিলেন।
যদিও পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে, তবে পারমাণবিক প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ইউরোপ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল।
ব্রিটেন ও ফ্রান্সের কাছে রাশিয়ার তুলনায় অনেক কম পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রাশিয়ার সমতুল্য পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে এবং এর কিছু অংশ ইউরোপে মোতায়েন করা আছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন