মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে যে তাদের হাতে অনেক শক্তিশালী ‘তাস’ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, ইইউ পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
খবর অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২ এপ্রিল, যা তিনি ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো বিদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন নির্ভরতা কমানো।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন ইউরোপীয় আইনপ্রণেতাদের বলেন, “ইউরোপ এই বিতর্কের সূত্রপাত করেনি। আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই না, তবে প্রয়োজন হলে আমাদের একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা রয়েছে এবং আমরা তা ব্যবহার করব।
ইইউ-এর নির্বাহী শাখা হিসেবে কমিশন, ২৭টি সদস্য দেশের হয়ে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করে এবং বাণিজ্য বিরোধ দেখাশোনা করে।
ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট অধিবেশনে ভন ডের লিয়েন আরও বলেন, “বাণিজ্য থেকে প্রযুক্তি এবং বাজারের আকার—ইউরোপের হাতে অনেক কিছুই রয়েছে। তবে প্রয়োজনে কঠোর পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি থেকেই এই শক্তি তৈরি হয়েছে।
আমাদের সব ধরনের পদক্ষেপ প্রস্তুত।
জানা গেছে, ট্রাম্পের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় ইইউ-ও মধ্য এপ্রিল নাগাদ প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে।
ইইউ-এর এই শুল্কের লক্ষ্য হবে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, বস্ত্র, গৃহস্থালীর সরঞ্জাম এবং কৃষি পণ্য।
তবে ট্রাম্পের শুল্ক কীভাবে কার্যকর করা হবে, বিশেষ করে ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপের বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।
তাই ইইউ তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে এর প্রভাব মূল্যায়ন করতে চাইছে।
ভন ডের লিয়েন আরও বলেন, “অনেক ইউরোপীয় নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণায় হতাশ। এটি বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সমৃদ্ধ বাণিজ্য সম্পর্ক।
আমরা যদি একটি গঠনমূলক সমাধান খুঁজে বের করতে পারি, তবে সবার জন্যই ভালো হবে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এমন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
কারণ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে রপ্তানি হয়ে থাকে। তাই এই দুই অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস