যুদ্ধ বন্ধ না হলে নিষেধাজ্ঞা নয়: রাশিয়ার উপর সুর চড়াল ইউরোপ!

ইউক্রেন যুদ্ধ: রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার বিষয়ে একমত ইউরোপীয় নেতারা।

প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এখনই তুলে না নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া এখনো পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি লাভ করেনি, এমন পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ-সহ অন্যান্য নেতারা বলেছেন, যতক্ষণ না ইউক্রেনে “স্পষ্টভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে,” ততক্ষণ পর্যন্ত মস্কোর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

এই সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার এবং জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরাও এই বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন।

খবর অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে পুনরায় নির্বাচিত হলে রাশিয়ার উপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় নেতাদের এই সিদ্ধান্ত বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার জানিয়েছেন, রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়ানোর জন্য নিষেধাজ্ঞাগুলি কিভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলোচনার টেবিলে আসতে গড়িমসি করছেন এবং সময়ক্ষেপণ করছেন।

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া “একটি গুরুতর ভুল” হবে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া কোনো প্রকার শান্তি চায় না, বরং তারা ইউরোপ ও আমেরিকাকে বিভক্ত করতে চাইছে। শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে রাশিয়া যদি ইউক্রেনের জ্বালানি কেন্দ্রগুলোতে হামলা করা বন্ধ না করে, তাহলে তাদের উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।

সম্মেলনে একটি ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বাহিনী’ (reassurance force) গঠনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এই বাহিনী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দিতে সহায়তা করবে।

যদিও এই বিষয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য এই ধরনের একটি বাহিনী গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে, তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এই প্রস্তাবে সমর্থন জানাননি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের মিত্র কিছু দেশ সেনা পাঠাতে প্রস্তুত, তবে কারো কারো এক্ষেত্রে সক্ষমতার অভাব রয়েছে এবং রাজনৈতিক কারণে অনেকে সেনা পাঠাতে দ্বিধা বোধ করছেন।

ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার জানিয়েছেন, ফরাসি, ব্রিটিশ এবং জার্মান সামরিক কর্মকর্তারা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য কিয়েভ যাবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এর প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতি সাধারণত কোনো দেশের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয় না, বরং শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *