ট্রাম্পের কূটনীতিতে ইউরোপের প্রভাব কমে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা!

ইউরোপের উপর ট্রাম্পের প্রভাব: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোণঠাসা হওয়ার শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিমালার কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইউরোপীয় দেশগুলো ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে ইউরোপের প্রভাব কমে আসছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কারণে ইউরোপের মিত্র দেশগুলো অনেক ক্ষেত্রেই ব্রাত্য হয়ে পড়ছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের নমনীয় মনোভাব ইউরোপীয় দেশগুলোর উদ্বেগের কারণ হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি রাশিয়ার তেল ও গ্যাস শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তবে ট্রাম্পের মূল আগ্রহ ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা, যা অনেক ক্ষেত্রে কিয়েভের কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যদিও ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যেমন – রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহার করে ঋণ দেওয়া, তবুও এক্ষেত্রেও বিভিন্ন দেশের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। হাঙ্গেরির মতো কিছু দেশ ইউক্রেনকে সমর্থন করতে রাজি নয়।

অন্যদিকে, ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের ক্ষেত্রেও ইউরোপের ভূমিকা সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপগুলো ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রভাব বিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে।

এমনকি, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কিছু ইউরোপীয় দেশের পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে।

তবে, সবকিছু এতটা হতাশাজনক নয়। ট্রাম্পের মেয়াদেও কিছু ইতিবাচক দিক দেখা গেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি করেছে এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইউরোপীয় দেশগুলো ট্রাম্পের উপর কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করতে পারবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে বেশি আগ্রহী, যা ইউরোপের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ। কারণ এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইউরোপের গুরুত্ব আরও কমতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার এই ক্ষমতার লড়াই এবং নীতি পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

তাই, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের এসব ঘটনাপ্রবাহের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে এবং দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *