ট্রেনে চেপে ইউরোপ ভ্রমণ: খাদ্যরসিকদের জন্য এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা!

ইউরোপ ভ্রমণে খাদ্যরসিকদের জন্য ট্রেনে চড়ে ঘুরে আসা এক দারুণ অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি, একজন পর্যটক প্যারিস থেকে যাত্রা শুরু করে ফ্রান্স, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডের পাঁচটি শহরে ট্রেনে করে ভ্রমণ করেন। এই সফরে তিনি স্থানীয় সংস্কৃতি ও খাবারের সঙ্গে পরিচিত হন, যা তাঁর ভ্রমণকে আরও উপভোগ্য করে তুলেছিল।

ভ্রমণের শুরুতে, পর্যটক প্যারিস থেকে ট্রেনে চেপে রেইমসে যান। রেইমসে পৌঁছে তিনি একটি ঐতিহাসিক ক্যাথেড্রাল পরিদর্শন করেন এবং সেখানকার চ্যাম্পেইন প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। চ্যাম্পেইন প্রস্তুতকারক একটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময়, তিনি জানতে পারেন কীভাবে তারা প্রকৃতির নিয়ম মেনে এই পানীয় তৈরি করেন।

এখানে, তিনি বিভিন্ন স্বাদের চ্যাম্পেইন পরখ করেন, যা তাঁর খাদ্য অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা যোগ করে।

এরপর, পর্যটক জার্মানির মেইনজে যান। মেইনজে তিনি একটি আপেল বাগান পরিদর্শনে যান, যেখানে স্থানীয় আপেল চাষিরা তাঁদের বাগান সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। আপেল বাগানে তাজা ফল ও সাইডার উপভোগ করার পাশাপাশি, তিনি এখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেন।

মেইনজের একটি রেস্তোরাঁয় রাতের খাবারে পরিবেশিত স্থানীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি খাবারগুলো ছিল খুবই সুস্বাদু।

জার্মানির ফ্রাইবুর্গে, পর্যটকদের অভিজ্ঞতা ছিল অন্যরকম। এখানকার বাজারে স্থানীয় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের সবজি, ফল, এবং পনিরের সমাহার দেখা যায়। ফ্রাইবুর্গের বাজারটি যেন শহরের প্রাণকেন্দ্র, যেখানে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে কেনাকাটা করেন।

পর্যটক স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় ভেজিটেরিয়ান খাবার উপভোগ করেন, যা ছিল খুবই স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু।

ভ্রমণের শেষ গন্তব্য ছিল সুইজারল্যান্ডের জুরিখ। জুরিখ শহরে, তিনি একটি অত্যাধুনিক উল্লম্ব খামার (vertical farm) পরিদর্শন করেন, যেখানে এলইডি আলো এবং মাছের বর্জ্য ব্যবহার করে সবজি উৎপাদন করা হয়। এখানে, তিনি বিভিন্ন ধরনের মাইক্রো গ্রিনসের স্বাদ গ্রহণ করেন।

এই ভ্রমণকালে, পর্যটক ইউরোল (Eurail) পাস ব্যবহার করেন, যা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ট্রেনে ভ্রমণের সুযোগ করে দেয়। এই পাস ব্যবহার করে, তিনি খুব সহজেই এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে পেরেছেন। ভ্রমণের সময়, ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখতে দেখতে, তিনি বই পড়তেন এবং নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতেন।

ইউরোপে ট্রেন ভ্রমণ শুধু একটি মাধ্যম নয়, বরং এটি প্রকৃতির কাছাকাছি আসার এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে অনুভব করার এক দারুণ উপায়। এই ধরনের ভ্রমণ, ব্যস্ত জীবন থেকে দূরে, প্রকৃতির নীরবতা উপভোগ করতে সাহায্য করে।

এই ভ্রমণের মাধ্যমে, পর্যটক স্থানীয় সংস্কৃতি, খাদ্য, এবং মানুষের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর এই অভিজ্ঞতা, খাদ্যরসিকদের জন্য ইউরোপ ভ্রমণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

তথ্যসূত্র: ট্রাভেল + লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *