যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ইউরোপীয় নেতাদের ঝটিকা সফর, কিয়েভে কী বার্তা?

ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে এবং রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও পোল্যান্ডের শীর্ষ নেতারা কিয়েভে পৌঁছেছেন। শনিবার সকালে কিয়েভের প্রধান রেলওয়ে স্টেশনে তাঁদের স্বাগত জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রেই ইয়ারমাক।

ইউরোপীয় দেশগুলোর এই সফর মূলত রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে। এই লক্ষ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।

ইউক্রেন ও তার মিত্র দেশগুলো অবিলম্বে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। তবে রাশিয়া এই প্রস্তাবের প্রতি শর্তসাপেক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে। তাদের মতে, কিছু ‘বিষয়’ বিবেচনা করতে হবে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে শোনা যাচ্ছে, তারা পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে জোর দিচ্ছে। এছাড়াও, তারা এই সংঘাতের ‘মূল কারণ’ হিসেবে ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলে বিস্তারকে দায়ী করছে।

উল্লেখ্য, ন্যাটো হলো একটি সামরিক জোট, যা মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গঠিত হয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তাঁর সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি যদি কার্যকর না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।

ট্রাম্পের এই অবস্থানের কারণে ইউরোপীয় নেতারা উদ্বিগ্ন। কারণ, তাঁর নতুন প্রশাসনের নীতিতে রাশিয়ার প্রতি কিছুটা নরম মনোভাব দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইউরোপীয় নেতারা একজোট হয়ে ইউক্রেনকে সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থন যোগানোর চেষ্টা করছেন। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে চাইছেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে সমর্থন দিতে প্রস্তুত।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, “একটি ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তি তখনই সম্ভব, যখন যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে ও কোনো শর্ত ছাড়াই বন্ধ হবে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রসহ সকলের কাছে এই প্রস্তাব পেশ করছি।”

ইউক্রেন ১১ মার্চ এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। তবে রাশিয়া এখনো পর্যন্ত এতে রাজি হয়নি। তারা সময়ক্ষেপণ করছে এবং বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিচ্ছে।

ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, “যদি মস্কো এতে বাধা দেয়, তাহলে আমরা ইউরোপীয় দেশগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের উপর চাপ আরও বাড়াব।”

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *