ইউরোভিশন ফাইনাল: জমকালো মঞ্চে কোন দেশের জয়?

ইউরোভিশন: ইউরোপের সবচেয়ে বড় গানের উৎসব।

প্রতি বছর ইউরোপ মহাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা। এটি কেবল একটি সঙ্গীতানুষ্ঠান নয়, বরং এটি বিভিন্ন সংস্কৃতির মিলনস্থল, যেখানে গানের মাধ্যমে মানুষে মানুষে গড়ে ওঠে এক অন্যরকম সম্পর্ক।

সুইজারল্যান্ডের বাসেলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই ৬৯তম আসরটি সে কারণে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৫৬ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা তাদের নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। অনেকটা অলিম্পিকের মতো, যেখানে দেশগুলো তাদের সঙ্গীত প্রতিভার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে একত্রিত হয়।

প্রতি বছরই এটি ইউরোপের সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। শুধু গান শোনা বা দেখা নয়, এর সাথে জড়িয়ে থাকে ফ্যাশন, সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবনযাত্রা।

এবারের ইউরোভিশনে অংশ নিচ্ছে ২৬টি দেশ। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ, এস্তোনিয়া, ইসরায়েল, লিথুয়ানিয়া, স্পেন, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, ইতালি, পোল্যান্ড, জার্মানি, গ্রিস, আর্মেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, মাল্টা, পর্তুগাল, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফ্রান্স, সান মারিনো এবং আলবেনিয়া।

এদের মধ্যে সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া এবং ইসরায়েলের শিল্পীরা এবার আলোচনায় রয়েছেন।

ইউরোভিশনের গানগুলো একদিকে যেমন “লা, লা, লা” কিংবা “বুম ব্যাং-এ-ব্যাং”-এর মতো পরিচিত, তেমনই আবার অনেক কালজয়ী গানও উপহার দিয়েছে এই মঞ্চ।

১৯৭৪ সালে “ওয়াটারলু” গানের মাধ্যমে এবিবিএ’র

মতো কিংবদন্তি ব্যান্ড দল তৈরি হয়েছে এই প্রতিযোগিতা থেকে।

সেলিন ডিওন, কনচিতা উরস্ট, এবং ইতালীয় রক ব্যান্ড ম্যানেস্কিনের মতো শিল্পীরাও ইউরোভিশনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছেন।

তবে, ইউরোভিশন নিছক গান আর আনন্দের উৎসব নয়। এখানে রাজনীতিও অনেক সময় প্রভাব ফেলে।

বিশেষ করে, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে এই প্রতিযোগিতায় রাশিয়ার অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবারও ইসরায়েলের অংশগ্রহণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমের প্রতিবাদে অনেকে তাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিযোগিতার বিজয়ী নির্বাচনের প্রক্রিয়া বেশ জটিল। বিভিন্ন দেশের সঙ্গীত জগতের বিচারকদের (জুরি) রায়ের পাশাপাশি, দর্শক ভোটের মাধ্যমে বিজয়ী নির্বাচিত করা হয়।

বিজয়ী ঘোষণার সময় যখন বিভিন্ন দেশের পয়েন্ট ঘোষণা করা হয়, তখন একটি উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়।

কোনো দেশ যদি ‘শূন্য পয়েন্ট’ পায়, তবে তা তাদের জন্য বেশ লজ্জাজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

ইউরোভিশন একটি বিশাল এবং আকর্ষণীয় ইভেন্ট, যা সঙ্গীতের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশকে একত্রিত করে।

এই বছরও, বাসেলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই প্রতিযোগিতা দর্শকদের জন্য নতুন কিছু নিয়ে আসবে, এমনটাই আশা করা যায়।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *