এভারটন: গুডিসন পার্কের বিদায় এবং এক নতুন দিগন্তের সূচনা
ফুটবল ভালোবাসেন এমন মানুষের কাছে মাঠ শুধু একটা খেলার জায়গা নয়, বরং অনেক অনুভূতির সাক্ষী। ইংল্যান্ডের অন্যতম ঐতিহ্যপূর্ণ ক্লাব এভারটন তাদের দীর্ঘ ১৩৩ বছরের যাত্রা শেষে প্রিয় গুডিসন পার্ককে বিদায় জানাচ্ছে।
এই মাঠ শুধু একটি স্টেডিয়াম ছিল না, এটি ছিল এভারটন সমর্থকদের আবেগ, ভালোবাসা আর হাজারো স্মৃতিবিজড়িত একটি স্থান।
রবিবার, সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ম্যাচের মধ্যে দিয়ে পুরুষ দলের জন্য গুডিসন পার্কে শেষ হলো প্রিমিয়ার লিগের পথচলা। মাঠের প্রতিটি ঘাস, প্রতিটি কোণা যেন জড়িয়ে ছিল ইতিহাসের সাথে।
এই মাঠেই জন্ম হয়েছে কতশত কিংবদন্তীর, যেখানে পেলে এবং ইউসেবিওর মতো ফুটবল গ্রেটদের পায়ের ছাপ পড়েছে। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন, আর্সেন ওয়েঙ্গারের মতো দিকপালরাও গুডিসন পার্কের ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়েছেন।
গুডিসন পার্কের বিদায় একদিকে যেমন কষ্টের, তেমনই ভবিষ্যতের জন্য উন্মাদনাও রয়েছে। ক্লাবটি এখন তাদের নতুন ঠিকানা, ব্রামলি-মুরের ডকে অবস্থিত অত্যাধুনিক হিল ডিকিনসন স্টেডিয়ামে যাত্রা শুরু করবে।
নতুন এই স্টেডিয়ামে খেলা উপভোগ করতে মুখিয়ে আছেন সমর্থকরা।
পুরোনো মাঠের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে ব্লু রুম পডকাস্টের হোস্ট ম্যাট জোনস বলেন, “যেন একজন বাবা তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে কাঁদছে, অনেকটা তেমন অনুভূতি হচ্ছে।
দিন যতো এগিয়ে আসছে, আবেগ ততোটাই বাড়ছে।”
গুডিসন পার্ক শুধু একটি ফুটবল মাঠ ছিল না, বরং এটি ছিল সমর্থকদের ভালোবাসার কেন্দ্র। মাঠের প্রতিটি ইটের সাথে জড়িয়ে আছে তাদের আবেগ।
মাঠের পুরনো কাঠের সিটগুলোতে বসে খেলা দেখার স্মৃতি এখনো তাদের মনে গেঁথে আছে। খেলার সময় যখন সবাই একসঙ্গে দাঁড়িয়ে চিৎকার করত, তখন সেই কাঠের চেয়ারগুলোর শব্দ যেন এক ভিন্ন আবহ তৈরি করত, যা সম্ভবত আর কোনো স্টেডিয়ামে পাওয়া যাবে না।
তবে, গুডিসন পার্কের গল্প এখানেই শেষ হচ্ছে না। পুরনো এই মাঠটি এখন থেকে এভারটনের নারী দলের আবাসস্থল হবে।
ক্লাব কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, এর মাধ্যমে নারী ফুটবল দল আরো বেশি গুরুত্ব পাবে এবং তাদের উন্নতির পথ সুগম হবে।
এভারটনের জন্য গুডিসন পার্কের বিদায় একটি বড় পরিবর্তন। তবে, নতুন স্টেডিয়ামে যাত্রা শুরুর মাধ্যমে তারা যেন আধুনিক ফুটবলের সাথে তাল মিলিয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে, এমনটাই প্রত্যাশা।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা